কলাপাড়ায় পাউবো উপড়ে ফেলেছে ১০ হাজার তরমুজ গাছ ॥ কৃষকের বুকফাঁটা আর্তনাদ

প্রকাশিত: ৭:২৮ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৭, ২০২২

কলাপাড়ায় পাউবো উপড়ে ফেলেছে ১০ হাজার তরমুজ গাছ ॥ কৃষকের বুকফাঁটা আর্তনাদ

কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি ॥ পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ভূমিহীন এক কৃষকের প্রায় ১০ হাজার ফলন্ত তরমুজ গাছ উপড়ে ফেলা হয়েছে। এ ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ধুলাস্বার ইউনিয়নের পশ্চিম ধুলাস্বার গ্রামে। কৃষক দেলোয়ার খলিফা প্রায় আড়াই লাখ টাকা খরচ করে বেড়িবাঁধের স্লোপে ১৫ হাজার তরমুজের বীচ বপন করেছেন। গাছগুলো ভালভাবেই বেড়ে উঠছিল। হঠাৎ করে রবিবার দুপুরের দিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন এসে এই তরমুজ গাছ উপড়ে ফেলেছে। গ্রামের মানুষ এক মাস সময় দেয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন, কিন্তু তারা কারো কথা শোনেননি বলে কৃষক দেলোয়ারের অভিযোগ। চোখের সামনেই এমন সর্বনাশ দেখে ওই কৃষক কান্নায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
এদিকে বেড়িবাঁধের স্লোপ কুপিয়ে নষ্ট করায় এবং বাঁধের মাটি ক্ষয়রোধে বনবিভাগের লাগানো ডুমুর গাছ নষ্ট করা হয়েছে বলে প্রকল্পের প্রকৌশলী এবং বনবিভাগের বিট কর্মকর্তার পাল্টা অভিযোগ করেছেন।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক দেলোয়ার বলেন , কয়েক বছর ধরে তিনি পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধের স্লোপে বিভিন্ন ধরনের সবজির আবাদ করে আসছেন। এ বছরও বনবিভাগের বিট কর্মকর্তার মৌখিক অনুমতি নিয়ে দুই মাস আগে তরমুজের আবাদ করি। এমনকি ওখানকার বনবিভাগের দায়িত্বে থাকা বিট কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেনকে এ বাবদ ১০ হাজার টাকা দিয়েছেন। কৃষক দেলোয়ার আরো জানান, কান্নাকাটি করে অনুরোধ করেছিলাম। আর একটা মাস সময় দিলে ফলন বিক্রি করতে পারতেন। কিন্তু তারা কর্ণপাত করেননি। এমনকি গাছ উপড়ে ফেলে উল্টো মামলা দেয়ার হুমকি দিয়েছেন তারা।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক দেলোয়ারের স্ত্রী সালমা বেগম জানান, তার স্বামী এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে এ তরমুজ ক্ষেত করেছেন। ফলন ধরা গাছগুলো উপড়ে ফেলা হয়েছে। এখন এই টাকা কিভাবে শোধ দিবেন তা ভেবে তিনি কান্না জুড়ে দেন।
বনবিভাগের দায়িত্বে থাকা গঙ্গামতি বিট কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন জানান, আমি কোনো টাকা পয়সা নেইনি। তাকে নিষেধ করার পরও সে গাছ লাগাইছে। এতে বাঁধের অনেক ক্ষতি হয়েছে। ওখানে ঘাষ নষ্ট হওয়ার কারনে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ইঞ্জিনিয়ার গাছ উঠিয়ে ফেলেছে বলে তিনি সাংবাদিকদের জানান।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপকূলীয় বাঁধ উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম জনান, ওখানে তরমুজ গাছ লাগিয়েছে আমি আগে দেখিনি। বাঁধের কাজ শেষ করে বনবিভাগের কাছে হস্তান্তর করলে তারা ডুমুর গাছ লাগিয়েছে। তবে এর সঙ্গে বনবিভাগের কোন লোক সম্পৃক্ত রয়েছেন কিনা তাও ক্ষতিয়ে দেখবেন বলে এই প্রকৌশলী জানান।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মো.আরিফ হোসেন জানান, বাঁধের স্লোপে তরমুজ গাছ লাগানোর জায়গা নয়। এতে বাঁধের ক্ষতি হয়। এছাড়া তরমুজ গাছের কারনে বাঁধে ইদুঁরের বাসা বাধতে পারে। এ কারনে বাঁধে লতা পাতার কোন গাছ গ্রহন করিনা। সে তরমুজ গাছ যদি উঠিয়ে থাকে, তবে ভুল কিছু করেনি।

সংবাদটি শেয়ার করুন