সেতু আছে, সংযোগ সড়ক নেই

প্রকাশিত: ৬:৫৫ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৯, ২০২২

সেতু আছে, সংযোগ সড়ক নেই

মূল সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হলেও সংযোগ সড়ক হয়নি। ফলে সেতুটি কোনো কাজে লাগছে না। সম্প্রতি পটুয়াখালীর দশমিনায় আরজবেগী বাজার এলাকায়
মূল সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হলেও সংযোগ সড়ক হয়নি। ফলে সেতুটি কোনো কাজে লাগছে না। সম্প্রতি পটুয়াখালীর দশমিনায় আরজবেগী বাজার এলাকায়ছবি: প্রথম আলো
খালের ওপর আরসিসি গার্ডার সেতুর মূল কাঠামোর নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে এক বছর আগে। কিন্তু সরকারি জমির সীমানা নির্ধারণ জটিলতার কারণে সংযোগ সড়ক নির্মাণকাজ শুরু হয়নি। এই পরিস্থিতি পটুয়াখালীর দশমিনা সদর ইউনিয়নের আরজবেগী খালের ওপর নির্মাণাধীন সেতুর।
অথচ এই সেতু মানুষের চলাচলসহ যানবাহন চলাচলে উন্মুক্ত হলে দশমিনা ইউনিয়নের সঙ্গে উপজেলার রণগোপালদী ইউনিয়নের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হবে।
উপজেলার দশমিনা ইউনিয়নের আরজবেগী বাজারসংলগ্ন আরজবেগী খাল নামে পরিচিত। এটি দশমিনা ইউনিয়ন ও রণগোপালদী ইউনিয়নকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে। রণগোপালদী ইউনিয়নের অন্তত পাঁচটি গ্রামের শিক্ষার্থীরা এই সেতু পেরিয়ে আরজবেগী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে যায়।
সরকারি জমি মাপজোক করে সীমানা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
লোহার সেতুটি চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়লে দুর্ভোগে পড়েন দুই ইউনিয়নের বাসিন্দারা। এই অবস্থায় খালের ওপর আরসিসি গার্ডার সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)।
দশমিনা উপজেলা প্রকৌশল কার্যালয় সূত্র জানায়, ২০২০-২০২১ অর্থবছরে আরজবেগী খালের ওপর সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। মূল সেতুর দৈর্ঘ্য ৩৪ মিটার এবং ফুটপাতসহ প্রস্থ ৯ দশমিক ৬ মিটার। এ ছাড়া সেতুর দুই পাশের সংযোগ সড়ক হবে, উত্তর দিকে ১১০ মিটার ও দক্ষিণ দিকে ৭০ মিটার।
সেতুর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ কেটি ২৪ লাখ টাকা। কাজের দায়িত্ব পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এনায়েত হোসেন ও মেসার্স শম্পা কনস্ট্রাকশন। ১ অক্টোবর ২০২০ এই সেতুর নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য এসএম শাহাজাদা। ২০২১ সালের জুনে সেতুর মূল কাঠামো নির্মাণকাজ শেষ হয়।
এদিকে সংযোগ সড়ক নির্মাণ না হওয়ায় সেতুটি চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা যাচ্ছে না। এ সম্পর্কে উপজেলা প্রকৌশলী মকবুল হোসেন বলেন, সংযোগ সড়ক নির্মাণের জন্য সেতুর দুই পাশের সরকারি যে জায়গা রয়েছে, সেখানে কিছু লোকজন দোকান বানিয়ে ব্যবসা করছেন। এ ছাড়া একটি বৈদ্যুতিক খুঁটি রয়েছে, যা অন্যত্র সরানো প্রয়োজন। সরকারি ভূমি উদ্ধার করে সীমানা নির্ধারণ না হওয়ায় সংযোগ সড়ক নির্মাণকাজ শুরু করা যাচ্ছে না। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে।

এদিকে, সেতুটি চালু না হওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। আরজবেগী গ্রামের বাসিন্দা সিকদার নজরুল ইসলাম বলেন, ‘সেতু নির্মাণ হওয়ায় আমরা খুশি হয়েছি। কিন্তু এক বছরেও নির্মাণকাজ শুরু হয়নি। সেতুর দক্ষিণ প্রান্তের বাসিন্দারা উপজেলা সদরে যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।’

রণগোপালদী ইউপির চেয়ারম্যান এটিএম আসাদুজ্জামান নাসির সিকদার বলেন, আরজবেগী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে তাঁর ইউনিয়নের সেতু সংলগ্ন এলাকার অন্তত পাঁচটি গ্রামের শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। তারা ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে।

ইউএনও মহিউদ্দিন আল হেলাল বলেন, উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় লোকজন নিয়ে সরকারি জমি উদ্ধারের জন্য মাপজোক করে সীমানা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। অবৈধ দোকানমালিকদের স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য নোটিশ দেওয়া হয়েছে। অবৈধ দখলদাররা দ্রুত তাঁদের অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নেবে এবং দ্রুত সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণকাজ শুরু হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন