বরগুনায় এমপির সম্মুখেই ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষ ॥ পুলিশের লাঠিচার্জ

প্রকাশিত: ৪:৫৫ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৫, ২০২২

বরগুনায় এমপির সম্মুখেই ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষ ॥ পুলিশের লাঠিচার্জ

বরগুনায় জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্যের সামনেই ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় পুলিশের লাঠিচার্জে ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। বরগুনা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনের সামনে সোমবার দুপুর ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় সেখানে বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শমভু উপস্থিত ছিলেন। বিক্ষুব্ধ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা পরে কয়েকটি মোটরসাইকেল ও পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করেন।
এসব তথ্য নিশ্চিত করে বরগুনা সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহম্মেদ জানান, বেলা ১২টার দিকে বঙ্গবন্ধুর ৪৭তম শাহাদত বার্ষিকী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি কমপ্লেক্সে তার প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে ফেরার সময় শিল্পকলা একাডেমির সামনে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ওপর পদবঞ্চিত কয়েকজন হামলা চালায়। এ সময় দুই গ্রুপের নেতা-কর্মীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ লাঠিচার্জ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

এ সময় তারা কয়েকটি মোটরসাইকেলসহ অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের গাড়ি ভাঙচুর করে। পরে শিল্পকলা ও লঞ্চঘাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বর্তমানে শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলেও জানান ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
এ ঘটনায় জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল কবির রেজা জানান, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শিল্পকলায় প্রবেশের সময় হামলাকারীরা ছাদ থেকে তাদের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এ কারণে পুলিশের গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে।
রেজাউল কবির বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করছিলাম। এ সময় ছাত্রলীগ পরিচয়ে কয়েক সন্ত্রাসী আমাদের ওপর হামলার চেষ্টা করে। পুলিশ তাদেরকে লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
‘নতুন কমিটি ঘোষণার পর ওই সন্ত্রাসীরা একাধিকবার আমাদের উপর হামলার চেষ্টা করেছে এবং শহরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে।’
তবে সভাপতি পদবঞ্চিত জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সবুজ মোল্লা মুঠোফোনে বলেন, ‘এ ঘটনায় আমি বা আমার সমর্থক কোনো ছাত্রলীগ কর্মী জড়িত না। অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়েছিলাম, কিন্তু হঠাৎ পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে। কী ঘটেছে জানার চেষ্টা করছি।’
নদীবন্দর থেকে দেশীয় অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রলীগের এ নেতা বলেন, ‘ছাত্রলীগের কোনো নেতা-কর্মী নদীবন্দরে যায়নি। উদ্ধারকৃত অস্ত্র ছাত্রলীগের নয়।’
এ বিষয়ে জানতে এমপি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শমভুর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এসএম তারেক রহমান বলেন, ‘শিল্পকলা একাডেমির সামনে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পুলিশ গিয়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে একটি গ্রুপ একাডেমির দ্বিতীয় তলা থেকে পুলিশের গাড়িতে ইট ছুড়ে মারে। পরে নদীবন্দর এলাকায় অভিযান চালিয়ে অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।’
আট বছর পর গত ১৭ জুলাই বরগুনা শহরের সিরাজ উদ্দীন টাউন হল মিলানায়তনে বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন হয়। এরপর ২৪ জুলাই রাতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক জেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটির অনুমোদন দেন।
এতে জেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ৩৩ সদস্যের নাম প্রকাশ করা হয়। এরপর থেকে নতুন কমিটি প্রত্যাখ্যান করে বরগুনা শহরে পদবঞ্চিতরা বিভিন্ন সময় বিক্ষোভ মিছিল ও ভাংচুর চালায়।

সংবাদটি শেয়ার করুন