সড়ক দুর্ঘটনা ॥ সাংবাদিক মাসুদ রানার মৃত্যুতে বাকরুদ্ধ বরিশাল মিডিয়াঙ্গন

প্রকাশিত: ৪:২৯ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৭, ২০২৩

সড়ক দুর্ঘটনা ॥ সাংবাদিক মাসুদ রানার মৃত্যুতে বাকরুদ্ধ বরিশাল মিডিয়াঙ্গন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শরীয়তপুরের জাজিরায় ঢাকা-ভাঙ্গা মহাসড়কে ট্রাকের সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্সের সাংবাদিক মাসুদ রানার (৩৮) মৃত্যুতে শোকাভূত বরিশাল মিডিয়াঙ্গন। সহকর্মীরা বিবাসই করতে পারছেন না সোমবার দেখা সদা চঞ্চল সদালপি মাসুদ রানার মৃতদেহ দেখতে হবে মঙ্গলবার।
শরিয়তপুরের জাজিরায় ঢাকা-ভাঙ্গা মহাসড়কে একটি গ্যাস সিলিন্ডারবাহী ট্রাকের সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্সের সংঘর্ষে ছয়জন নিহত হয়েছে। নিহতরা হলেন, জাহানারা বেগম (৫৫), তার মেয়ে লুৎফুন নাহার লিমা (৩০), স্বাস্থ্যকর্মী ফজলে রাব্বি (২৮), গাড়িচালক জিলানি (২৮), গাড়ির হেলপার রবিউল ইসলাম (২৬) ও সাংবাদিক মাসুদ রানা (৩০)।
সকালেই দুর্ঘটনার সংবাদ ছড়িয়ে পড়ে বরিশালে। সাংবাদিক মাসুদ রানার মৃত্যুর সংবাদটিতে স্থবির হয়ে পড়ে তার প্রিয়জনেরা। সাংবাদিক মাসুদ রানা দৈনিক নবচেতনা পত্রিকার বরিশাল ব্যুরোর দায়িত্বে ছিলেন। পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
মাসুদ রানার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন বরিশাল প্রেসক্লাবের সভাপতি কাজী নাসিরউদ্দিন বাবুল, সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকিরহোসেনসহ সকল নেতৃবৃন্দ।
প্রেম করে রাখাইন কন্যকে বিয়ে করেছিলেন মাসুদ রানা
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, মাসুদ রানা প্রেম করে কুয়াকাটার রাখাইন পল্লির মেয়ে মালা রাখাইনকে বিয়ে করেছিলেন। দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্কের পর বিয়ে। বিয়ের পর স্ত্রীকে উপহার স্বরূপ ‘কাচ্চিখানা’ নামে একটি রেস্টুরেন্ট করে দেন তিনি। মাসুদ রানার স্বজন মেহেদী বলেন, তাদের ৩ বছরের সাজানো সংসার ছিল। তাদের কোনো সন্তান ছিল না। ভালোই চলছিল তাদের দিনকাল। কিন্তু একটি সড়ক দুর্ঘটনা সবকিছু তছনছ করে দিয়েছে। যা কোনো ভাবেই আমরা মানতে পারছি না।
মেহেদী আরও বলেন, মরদেহ নিয়ে তার নিজ গ্রামের দিকে রওনা হবো। তার গ্রামের বাড়ি জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নে। এছাড়া মাসুদ রানা ও মালা রাখাইন বরিশাল নগরীর ব্রাউন কম্পাউন্ড রোড এলাকায় একটি বাসায় ভাড়া থাকতো।
বাকরুদ্ধ সহকর্মীরা
মাসুদ রানার মৃত্যুতে তার সহকর্মী, বন্ধুবান্ধব যেন বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। সহকর্মী সৈয়দ মেহেদী হাসান বলেন, মাসুদ রানার মতো পরোপকারী বন্ধুসুলভ মানুষ খুব কমই ছিল। প্রতিদিন দেখা সাক্ষাৎ হতো, বিভিন্নস্থানে একসঙ্গে প্রোগ্রামে যেতাম। হঠাৎ করেই তার মৃত্যুর সংবাদ শুনে বাকরুদ্ধ হয়ে গেছি। আগামী শুক্রবারও আমাদের একসাথে একটি প্রোগ্রাম করার কথা ছিল।
আরেক সহকর্মী এন আমিন রাসেল বলেন, মাসুদ আমারা বন্ধু ছিল। প্রতিদিন কাজ শেষে একসঙ্গে আড্ডা দিতাম। ওর মতো ভালো বন্ধু হারিয়ে আমরা সহকর্মীরাসহ পুরো বন্ধুমহল ভাষা গারিয়ে ফেলেছি।
গতকাল মাগরিব বাদ আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের বাশাইল গ্রামে তার নিজ বাড়িতে জানাযা শেষে দাফন করা হবে মাসুদরানাকে। মরদেহের অবস্থা ও সময় বিবেচনায় বরিশালে জানাযা দেওয়া বা নিয়ে দেখানো সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন মাসুদ রানার বড়ভাই।

সংবাদটি শেয়ার করুন