বরিশালের বাবুগঞ্জে দুই নারীর মরহদেহ উদ্ধর নিয়ে চাঞ্চল্য ॥ পুলিশের দাবি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড

প্রকাশিত: ৩:২৭ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৬, ২০২৩

বরিশালের বাবুগঞ্জে দুই নারীর মরহদেহ উদ্ধর নিয়ে চাঞ্চল্য ॥ পুলিশের দাবি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ তিনজন ঘুমিয়ে ছিলেন একসাথে। ভোরে মিলল ২জনের লাশ। অপরজনও অচেতন। তিনজনই নারী। বুধবার (২৫ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১১টার দিকে জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ ভূতেরদিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ খবর পেয়ে ছুটে আসে। এর আগেই স্থানীয় জনতা তিনজনকে উদ্ধার করে হানপাতালে নিয়ে গেলে দুইজনকে মৃত ঘোষলা করে। মৃতরা হচ্ছেন ভূতেরদিয়া গ্রামের মকবুল হোসেনের স্ত্রী লালমুন্নেছা (৯৫) ও তার নাতি সোলাইমান হোসেনের স্ত্রী রিপা বেগম (২৩)। আর অচেতন নারি হচ্ছেন দেলোয়ারের স্ত্রী। খাদ্যে বিষক্রিয়ার কারণে দুজনের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ। তবে ঘরের সিদকাটা রয়েছে যা বিভ্রান্ত সৃষ্টি করেছে।
পুলিশ বলছে, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। বিষয়টি ভিন্ন খাতে নিতে চুরির মতো একটি ঘটনার রূপ দেওয়ার চেষ্টা করেছে দুর্বৃত্তরা। যদিও এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে এখন পর্যন্ত আটক করা যায়নি।

বাবুগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) অলিউল ইসলাম বলেন, বুধবার রাত দেড়টা থেকে দুইটার মধ্যে তারা সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান। অচেতন তিনজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায় স্থানীয়রা। হাসপাতালে নেওয়ার পর লালমুন নেছা ও রিপা আক্তারকে মৃত ঘোষণা করা হয়। মিনারা বেগম হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।’

স্থানীয়দের বরাতে তিনি জানান, বুধবার রাত ১১টা থেকে সাড়ে ১১টার দিকে প্রতিবেশী এক নারী টয়লেটে যেতে ঘর থেকে বের হন। তখন তিনি বাড়ির মধ্যে অজ্ঞাত এক ব্যক্তিকে দেখতে পেয়ে চিৎকার করেন। পরে ঘরে ঢোকার সময় সাবেক ইউপি সদস্য দেলোয়ার হোসেনের ঘরের দরজা খোলা দেখতে পেয়ে ডাকাডাকি করেন। কিন্তু ঘরের ভেতর থেকে কোনো সাড়াশব্দ না আসায় তিনি ডাক চিৎকার দেন। এ সময় আশপাশের বাড়ির লোকজন ছটে এসে ঘরের ভেতর গিয়ে তিন নারীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায় এবং পুলিশে খবর দেয়।

স্থানীয় গ্রাম পুলিশের দফাদার মো. হানিফ জানান, ‘রাতে বাড়িতে দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রী, মা ও ছেলের বউ ছাড়া কেউ ছিলেন না। কেউ সন্দেহ করছে চুরির জন্য খাবারের সঙ্গে কিছু মিশিয়ে তাদের অচেতন করা হয়েছিল। আর সেই বিষক্রিয়ায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে, বাকি একজন অচেতন হয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়। তবে আলামত দেখে হত্যাকাণ্ডের জন্যই এ ঘটনা সংঘঠিত হয়েছে বলে সন্দেহ করছেন অনেকে।’

দফাদার মো. হানিফ আরও বলেন, ‘ঘরের এক পাশে একটি ছোট আকারের সিঁদ কাটা হয়েছে, তবে সেটি দিয়ে কোনো মানুষের চলাচল সম্ভব নয়। আর পরিবারের লোকজনের কাছ থেকে যেটুকু জেনেছি তাতে কিছু স্বর্ণালংকারসহ অল্প কিছু মালামাল খোয়া গেছে। এক্ষেত্রে চুরি হলে আরও অনেক মালামালই তো খোয়া যেত।’

বাবুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ঘটনাটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে মনে হয়েছে। বিষয়টি ভিন্ন খাতে রূপ দিতে চুরির ঘটনা সাজানো হয়েছে। আমরা পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন