ঢাকা ১২ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৭শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১০ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৭:২৬ অপরাহ্ণ, মার্চ ৮, ২০২১
দেশে বসে প্রতিনিয়ত প্রতারণার নতুন নতুন ফাঁদ তৈরি করছে অবৈধভাবে বসবাসরত নাইজেরিয়ান ও তাদের কিছু বাংলাদেশি সহযোগীরা। নিজেদের বিদেশি পরিচয় দিয়ে টার্গেটকৃত ব্যক্তির ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ম্যাসেঞ্জার ও ই-মেইলের মাধ্যমে যোগাযোগ করে। এরপর বিশ্বস্ততা অর্জন করে অভিনব কায়দায় প্রতারণা করে হাতিয়ে নেয় নগদ অর্থ।
এভাবে প্রতারণার শিকার হয়ে এক ভুক্তভোগী হাবিবুর রহমান যোগাযোগ করেন গোয়েন্দা পুলিশের সঙ্গে। তারপরই বিষয়টি নজরে আসে ডিবি পুলিশের।
প্রতারণার শিকার প্রকৌশলী হাবিবুর রহমান জানান, তার সঙ্গে গত বছরের মার্চে ফেসবুকে বন্ধুত্ব হয় জেসিকা অস্কারের। জেসিকা আমেরিকান নেভিতে কাজ করেন বলে জানান তাকে। বর্তমানে রয়েছেন আফগানিস্তানে। সেখান থেকে এক মিলিয়ন ডলার পাঠাতে চায় হাবিবুর রহমানকে। সরল বিশ্বাসে বিদেশি বন্ধুর পাতা ফাঁদে পা দেন হাবিব।
১৭ ফেব্রুয়ারি কাস্টমস কর্মকর্তা পরিচয়ে ফোন আসে। বলা হয়, তার নামে (হাবিব) একটি পার্সেল এসেছে। এটি নেয়ার জন্য ৫৫ হাজার টাকা দিতে হবে। শুল্ক কর্মকর্তার দেয়া ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৫৫ হাজার টাকা জমা করেন হাবিব।
এভাবে পরের দিন আবারও কথিত শুল্ক কর্মকর্তার ফোন। বলে, পার্সেলটি স্ক্যানিং করতে দিতে হবে আরও প্রায় তিন লাখ টাকা। ওই একই অ্যাকাউন্টে সমপরিমাণ টাকা পরিশোধ করার পর ফের ফোন! বলা হয়, স্ক্যানিংয়ে পার্সেলটিতে ধরা পড়েছে বিপুল পরিমাণ বিদেশি মুদ্রা। ১৭ লাখ ৯৮ হাজার টাকা পরিশোধ না করলে মানি লন্ডারিংয়ের মামলার ভয় দেখানো হয়। এভাবে তিন দফায় হাবিবুর রহমানের কাছ থেকে কথিত কাস্টমস কর্মকর্তা হাতিয়ে নেন ২১ লাখ ২৫ হাজার টাকা।
এছাড়াও এমন লোভনীয় ই-মেইল আসে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে। ভুক্তভোগীরা জানান, প্রতারকরা নিজেদের অনেক টাকার মালিক দাবি করে বলেন, তাদের দেশে তারা এই টাকা (ডলার) নিয়ে নিরাপদ নয়। ব্যাংকের মাধ্যমে এসব টাকা পাঠাতে চায় তারা। এর মধ্যে অনেকে নিজেদের সুন্দর ছবি পাঠিয়েও দেন। কেউ আবার নিজেকে ডিভোর্স দাবি করে বিয়েও করতে চান।
এবিষয়ে ওয়েব বেইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিমের ইনচার্জ অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার আশরাফউল্লাহ বলেন, অনলাইনে প্রতারণা করে হাবিবুর রহমান নামের এক ব্যক্তির নিকট থেকে ২১ লাখ ২৫ হাজার টাকা আত্মসাৎ করে এক প্রতারক চক্র। এ ঘটনায় বনানী থানায় গত ৫ মার্চ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলা তদন্তকালে বাদীর দেয়া তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় অভিযুক্তদের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। শনিবার (৬ মার্চ) রাজধানীর খিলক্ষেত থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে ওয়েব বেজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা নিজেদের বিদেশি পরিচয় দিয়ে টার্গেটকৃত ব্যক্তির ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ম্যাসেঞ্জার ও ই-মেইলের মাধ্যমে যোগাযোগ করে। এরপর বিশ্বস্ততা অর্জন করে অভিনব কায়দায় প্রতারণা করে নগদ অর্থ হাতিয়ে নেয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, নাইজেরিয়ার নাগরিক জন জোসেফ (২৭), ইমেকা ইউরিক (৩০), মোসা. লতা আক্তার (২৬), মোসা. আয়শা আক্তার (১৯), মো. হাবিবুর রহমান ওরফে হাবীব (২৭), মো. আশরাফুল ইসলাম ওরফে কবীর(২৪) ও মো. আল আমিন (২৭)।
এ সময় তাদের কাছ থেকে ১৪টি মোবাইল ফোন, ২০টি সিম কার্ড, বিভিন্ন ব্যাংকের ৮টি এটিএম কার্ড ও নগদ ৯৯ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
প্রকাশকঃ ডাক্তার জি.কে চক্রবর্তী।
সম্পাদকঃ কাজী মফিজুল ইসলাম।
প্রধান সম্পাদকঃ নুসরাত রসিদ।
নির্বাহী সম্পাদকঃ জাকিরুল মোমিন।
মোবাইলঃ 01711225620
মেইলঃ protidin.barisal@gmail.com
ঠিকানাঃ প্যারারা রোড, বরিশাল ৮২০০।
Design and developed by Engieer BD Network