করোনা রোগী বৃদ্ধির হারে শী‌র্ষে বরিশাল অঞ্চল

প্রকাশিত: ৯:০৯ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ২৯, ২০২১

করোনা রোগী বৃদ্ধির হারে শী‌র্ষে বরিশাল অঞ্চল

দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে। কিছুদিন ধরে প্রায় সব জেলাতেই নতুন রোগী বাড়ছে। এর মধ্যে এখন রোগী বৃদ্ধির হার সবচেয়ে বেশি বরিশাল অঞ্চলে। বরিশাল বিভাগের ছয়টি জেলার সব কটিতেই এক সপ্তাহের ব্যবধানে নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে দ্বিগুণের বেশি। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হারও তুলনামূলক বেশি।

রোগী বৃদ্ধি ও শনাক্তের হার বরিশালের পর বেশি দেখা যাচ্ছে ঢাকা ও খুলনায়। দেশের ৬৩ জেলার সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকে পাওয়া গত দুই সপ্তাহের (১৩ মার্চ থেকে ২৬ মার্চ) করোনা সংক্রমণের তথ্য বিশ্লেষণ করে এ চিত্র পাওয়া গেছে। প্রথম আলোর প্রতিনিধিরা ওই তথ্য সংগ্রহ করেছেন।

মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে দেশে করোনা সংক্রমণ লক্ষণীয়ভাবে বাড়ছে। বিভিন্ন জেলার সিভিল সার্জনরা বলছেন, কিছুদিন ধরে মানুষজনের মধ্যে মাস্ক ব্যবহার করা বা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে অনীহা তৈরি হয়েছে। জনসমাগমও স্বাভাবিক সময়ের মতো হয়ে গেছে। এগুলোই সংক্রমণ আবার বেড়ে যাওয়ার কারণ বলে তাঁরা মনে করছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, শুরু থেকে বরিশাল অঞ্চলে রোগী কম। এখন মোট শনাক্ত রোগীর ৩ দশমিক ০৫ শতাংশ বরিশাল বিভাগের। কিন্তু গত এক সপ্তাহের হিসাব বলছে, এ দফায় বরিশাল অঞ্চলে সংক্রমণ দ্রুত বাড়ছে।

সারা দেশে ২০–২৬ মার্চ এই এক সপ্তাহে তার আগের সপ্তাহের তুলনায় (১৩–১৯ মার্চ) রোগী বেড়েছিল ৮৩ শতাংশ। একই সময়ে বরিশালের জেলাগুলোতে রোগী বৃদ্ধির হার ছিল ১০০ থেকে ৪৬২ শতাংশ। ২০-২৬ মার্চ এই এক সপ্তাহে সারা দেশে রোগী শনাক্তের হার ছিল ১২ দশমিক ২৪ শতাংশ। আর এ সময়ে বরিশাল অঞ্চলের ছয় জেলার পাঁচটিতে রোগী শনাক্তের হার ছিল সাড়ে ১৪ থেকে ৩৪ শতাংশ। অবশ্য বরিশাল বাদে অন্য জেলাগুলোতে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা কম।

বরিশাল জেলায় গত এক সপ্তাহে (২০-২৬ মার্চ) নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে ১২৪ জন। শনাক্তের হার ২০ শতাংশ। অথচ তার আগের সপ্তাহে রোগী শনাক্ত হয়েছিল ৪২ জন, শনাক্তের হার ছিল ১৪ শতাংশ।

বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রকাশিত সর্বশেষ প্রতিবেদনেও দেখা গেছে, এখন সংক্রমণ বৃদ্ধির হার সবচেয়ে বেশি বরিশাল বিভাগে। বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, স্বাস্থ্যবিধি না মেনে আবার আগের মতোই জনসমাগম, মাস্ক না পরা এবং করোনার লক্ষণ থাকলেও অনেকে পরীক্ষা না করিয়ে ঘুরে বেড়ায়—এসব কারণে সংক্রমণ আবার বাড়ছে। তাঁরা জনগণকে নানাভাবে সচেতন করার চেষ্ট করছেন, কিন্তু তা উপেক্ষিত হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার আশঙ্কা আছে।
প্রথম আলো

সংবাদটি শেয়ার করুন