অধরা জয় এল শ্রীলংকাকে হারিয়ে

প্রকাশিত: ৯:১৩ অপরাহ্ণ, মে ২৩, ২০২১

অধরা জয় এল শ্রীলংকাকে হারিয়ে

বেশ কিছুদিন যাবৎ জয়টা অধরাই ছিল বাংলাদেশের। দলের মনোবল ফিরিয়ে আনতে একটা জয়ের দরকার ছিল খুব। তাতে কি বাংলাদেশের ক্রিকেটের ওপর একটু একটু করে জমা হওয়া সব সমস্যা ধুয়েমুছে যাবে? তা হয়তো যাবে না। ঘরের মাঠে তামিম ইকবালরা জিতেছেন। অথচ হাত তালি নেই, অভিবাদন নেই, নেই ‘বাংলাদেশ’ ‘বাংলাদেশ’ চিৎকার। জয়টাও হয়তো এমনই হয়ে থাকবে। সাদামাটা, কেবলই একটা জয় হয়ে। কিন্তু শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে ৩৩ রানের জয়টা যে সত্যিই দরকার ছিল খুব।

কেন? নানা কারণে। গত দশ ম্যাচ ধরে জয়ের দেখা নেই। সবশেষ জয়টাও এসেছিল ঘরের মাঠে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। এরপর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে একটা টেস্টে ড্র, বাকি সবগুলোতেই হারতে হয়েছে। কেবল জয়-পরাজয়ই মূল বিষয় হলে হতো, এর মাঝে বাংলাদেশের ক্রিকেটকে স্পর্শ করে গেছে নানা বিতর্ক।

সাকিব আল হাসান জাতীয় দলের জার্সি গায়ে চাপিয়েছিলেন বহুদিন বাদে। অনেক দিন পর দলটাকে দেখে ঠিক ‘পূর্ণশক্তির’ মনে হচ্ছিলো। এই জন নেই, ওই জন নেই হাহাকারও ছিল না। এমনিতেও বাংলাদেশ ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে শ্রীলঙ্কার চেয়ে। প্রত্যাশা তাই স্বভাবতই ছিল বেশি।

কিন্তু প্রত্যাশার সঙ্গে কি প্রাপ্তি মিলে সবসময়? উত্তরটা সন্দেহাতীতভাবেই ‘না’। প্রত্যাশা কি লিটন দাসের কাছেও কম ছিল? তা তিনি যতই ব্যর্থ হন আর যা কিছুই করুন। দেশের সবচেয়ে প্রতিভাবান ব্যাটসম্যান, কেউ কেউ আগ বাড়িয়ে বলেন সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যেই সেরা। স্টাইলিশ ব্যাটসম্যান, তার শট মুগ্ধতাও ছড়ায়। সবকিছুই ঠিক আছে। কিন্তু রানটাও তো করতে হবে!
এড়ড়মষব ঘবংিগুগল নিউজ-এ ঢাকা পোস্টের সর্বশেষ খবর পেতে ফলো করুন।

সেটা তিনি বোধ হয় ভুলেই যান। আজও যেমন শূন্য রানেই ফিরেছেন সাজঘরে। বাংলাদেশের রানও দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেনি তখন, স্কোরকার্ডে মাত্র ৫ রান। তার আগের চার ইনিংসও তো যাচ্ছে তাই। সংখ্যায় সাজালে সেটা হয় এমন, ২১ বলে ২১ রান, ৪ বলে ০ রান, ৩৬ বলে ১৯ রান ও ৪ বলে ০ রান।

লিটন দাসের অধ্যায় কবে থামবে, সেটাই এখন প্রশ্ন হয়ে উঠছে। আমরা এই লেখায় আপাতত সেদিকে আর না যাই। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত এখন তামিম ইকবাল। তিনি আজ তার ক্যারিয়ারের ৫১তম সেঞ্চুরি করেছেন, কিন্তু তবুও তাকে নিয়ে আলোচনার মধ্যে যেটুকু সমালোচনা, তা কি কমবে?

এই প্রশ্নের উত্তরে ভাবনা-চিন্তা না করেই ‘না’ বলে দেওয়া যায়। কারণ তার রান করা নয়, প্রশ্নটা ‘ব্যাটিং অ্যাপ্রোচ’ নিয়ে। তামিম সেখানে সমস্যা দেখেন না। তাই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতেও খুব বেশি বদলায়নি সেটা। ৭০ বল খেলে ৫২ রান করেছেন, তার মধ্যে ৩০ রানই এসেছে বাউন্ডারি থেকে।

তামিম ছাড়াও আরও দুইজন ফিফটি করেছেন। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও মুশফিকুর রহিম। তাদের মধ্যে মুশফিক এগিয়ে যাচ্ছিলেন ঠিকঠাক। তার ব্যাটে অনেক দিন ধরেই বড় রান নেই। দেশের সেরা ব্যাটসম্যানের ব্যাটে এমন রানের আকাল ভোগাচ্ছিল বাংলাদেশকেও।

মুশফিক এই ম্যাচে খেলছিলেন পরিস্থিতি বুঝেই। সবাই প্রহর গুণছিল কখন সেঞ্চুরিটা করবেন। কিন্তু রিভার্স সুইপ খেলার ব্যর্থ চেষ্টায় সেই প্রহর গোণা শেষ পর্যন্ত থেকেছে আক্ষেপ হয়ে। ৮৭ বলে তার ৮৪ রানেই ইনিংস থেমেছে লাকসান সান্দাকানের বলে, ইসুরু উদানার বলে।

ফিফটি করা আরেকজন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ব্যাটিং সবচেয়ে বেশি প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে থেকেছে। ইনিংসের শেষদিকে ব্যাট করেও ৭৬ বলে ৫৪ রান করেছেন তিনি। কচ্ছপ গতির এই ব্যাটিং অবশ্য বাংলাদেশকে শেষ অবধি আর ভোগায়নি। আফিফ হোসেন ধ্রুবর ৩ চারে ২২ বলে অপরাজিত ২৭ রানের ইনিংসে বাংলাদেশ পেয়েছিল ৩৫৭ রানের সংগ্রহ। যেটা জয়ের জন্য যথেষ্টই হয়েছে।

কিন্তু তবুও যত বড় জয় পাওয়ার কথা ছিল, সেটা আসেননি। তাতে বাংলাদেশের বোলারদের চেয়ে শ্রীলঙ্কান ব্যাটসম্যান ওয়ানিন্দো হাসারাঙ্গার কৃতিত্বই বেশি। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের এমনভাবে খেললেন, ব্যাটিংটা কত সহজই না মনে হলো!

সংবাদটি শেয়ার করুন