ঢাকা ১৩ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১০ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৪:৫৯ অপরাহ্ণ, জুন ২৪, ২০২১
প্রতিবছর সাধারণত নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে অষ্টম শ্রেণির সমাপনী জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি), জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি), প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি), ইবতেদায়ি সমাপনী এবং স্কুলগুলোর বার্ষিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। তবে এ বছর করোনা মহামারির কারণে এক দিনও ক্লাস করানো সম্ভব হয়নি। এরই মধ্যে অর্ধেক সময় পার হয়ে গেছে। বর্তমানে করোনা সংক্রমণের যে ঊর্ধ্বগতি তাতে শিগগিরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সম্ভাবনা কম। ফলে এবার এই পাঁচ গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা না-ও হতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। একই সঙ্গে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার সম্ভাবনাও কমছে।
এদিকে পাবলিকসহ গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা নিতে না চাইলে প্রধানমন্ত্রীর সম্মতির প্রয়োজন হবে। এ অবস্থায় শিগগিরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা সম্ভব না হলে প্রধানমন্ত্রীর কাছে এ বিষয়ে সারসংক্ষেপ পাঠানোর প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে শিক্ষার দুই মন্ত্রণালয়। তবে পরীক্ষা না হলেও অটো পাস দেওয়া হবে না। অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হবে।
গত মঙ্গলবার শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, ‘এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার বিষয়ে শিগগিরই সিদ্ধান্ত জানানো হবে। আমরা জানি, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা ভীষণ উদ্বেগের মধ্যে আছে। আমরা এটা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা করছি। খুব শিগগির সিদ্ধান্তটি জানিয়ে দেব। বেশিদিন আর উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে থাকতে হবে না।’
গত শনিবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেছেন, ‘পিইসি পরীক্ষার ব্যাপারে এখনো আমরা সিদ্ধান্ত নিইনি। আমাদের হাতে সময় আছে। যদি আরো কিছুদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা সম্ভব না হয়, তাহলে বিকল্প চিন্তা করা হবে। এখন আমাদের শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বাড়ির কাজ পৌঁছে দিচ্ছেন। সে কাজেই আমরা বেশি জোর দিচ্ছি।’
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, ‘আমরা এখন অ্যাসাইনমেন্টের ওপর জোর দিচ্ছি। যদি ডিসেম্বর পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা না যায় তাহলে বিকল্প কী হতে পারে, সেই পরিকল্পনাও করছি। পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
সূত্র মতে, পিইসি, জেএসসি ও বার্ষিক পরীক্ষার জন্য আগামী আগস্ট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারে দুই মন্ত্রণালয়। গত বছরও আগস্ট মাসেই পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষা না নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
অন্যদিকে এসএসসি পরীক্ষার জন্য ৬০ কর্মদিবস এবং এইচএসসি পরীক্ষার জন্য ৮৪ কর্মদিবসের সিলেবাস প্রকাশ করা হয়েছে। শুক্রবার এবং সরকারি ছুটির দিন বাদ দিলে এসএসসি পরীক্ষা নিতে তিন মাস এবং এইচএসসি পরীক্ষা নিতে চার মাস ক্লাস করাতে হবে। কিন্তু শিগগিরই ক্লাস শুরু করা না গেলে পরীক্ষা নেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়বে। করোনা সংক্রমণের যে অবস্থা তাতে আগামী মাসেও স্কুল-কলেজ খোলার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। এসব কারণে পরীক্ষার বিকল্প হিসেবে অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে মূল্যায়ন করার পরিকল্পনা জোরদার করা হচ্ছে।এরই মধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় যুক্ত রাখতে এবং ঝরে পড়া রোধ করতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে বাড়ির কাজের শিট। গত মে মাস থেকে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য এ কার্যক্রম শুরু করা হয়। জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি (নেপ) থেকে এসংক্রান্ত সিলেবাস প্রণয়ন করা হয়েছে। সে অনুযায়ী প্রতি সপ্তাহের বাড়ির কাজের শিট তৈরি করে তা প্রতিটি স্কুলে পাঠানো হয়েছে। বাড়ির কাজের ওই শিট ফটোকপি করে শিক্ষকরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে শিক্ষার্থীদের পৌঁছে দিচ্ছেন।বাড়ির কাজের শিট শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছানোর পরের সপ্তাহে শিক্ষকরা ওই শিট ফেরত নিয়ে আবার এর পরের সপ্তাহের বাড়ির কাজের শিট শিক্ষার্থীদের দিয়ে আসছেন। বাড়ির কাজের এসব শিট বিভিন্ন গ্রেডে মূল্যায়ন করে রেজিস্ট্রার খাতায় সংরক্ষণ করা হচ্ছে। এতে শুধু পঞ্চম শ্রেণি নয়, যুক্ত করা হয়েছে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীদেরও। সূত্র বলছে, এবার প্রাথমিক সমাপনীসহ অন্যান্য শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা যদি নেওয়া না যায় তাহলে বাড়ির কাজের শিটের মূল্যায়ন করেই শিক্ষার্থীদের পরবর্তী শ্রেণিতে উন্নীত করা হবে।
জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমির (নেপ) মহাপরিচালক মো. শাহ আলম বলেন, ‘আমরা প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের জন্য ওয়ার্কশিট আকারে বাড়ির কাজ দিচ্ছি। এরই মধ্যে আট সপ্তাহের বাড়ির কাজ তৈরি করা হয়েছে। যত দিন স্কুল না খুলছে, তত দিন এই কার্যক্রম চালানো হবে। প্রয়োজনে আমরা নতুন করে আরো বাড়ির কাজ তৈরি করব।’
সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছিলেন, ‘করোনা সংক্রমণ ৫ শতাংশের নিচে না নামলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা যাবে না। আর এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নির্ভর করছে করোনা পরিস্থিতির ওপর।
তবে আমরা এসব পরীক্ষার বিকল্পও চিন্তা করছি।’ বর্তমানে সংক্রমণের হার ২০ শতাংশের বেশি।
এ বছর জেএসসি, জেডিসিসহ অন্যান্য পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব না হলেও রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে। ফরম পূরণসহ আনুষঙ্গিক কাজ করারও পরিকল্পনা রয়েছে। প্রশ্নপত্র তৈরি এবং মুদ্রণের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। যেহেতু শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বোর্ডগুলো ও নেপকে এখনো এসংক্রান্ত কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি, তাই তারা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে।
প্রকাশকঃ ডাক্তার জি.কে চক্রবর্তী।
সম্পাদকঃ কাজী মফিজুল ইসলাম।
প্রধান সম্পাদকঃ নুসরাত রসিদ।
নির্বাহী সম্পাদকঃ জাকিরুল মোমিন।
মোবাইলঃ 01711225620
মেইলঃ protidin.barisal@gmail.com
ঠিকানাঃ প্যারারা রোড, বরিশাল ৮২০০।
Design and developed by Engieer BD Network