আকাশে মেঘ দেখলেই নদী পাড়ের মানুষ আতঙ্কে

প্রকাশিত: ৭:৫৩ অপরাহ্ণ, জুলাই ৩, ২০২১

আকাশে মেঘ দেখলেই নদী পাড়ের মানুষ আতঙ্কে

কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি / পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় বেড়িবাঁধ সঠিক সময়ে মেরামত না করায় নদীর পারের মানুষের দূর্ভোগ বেড়েছে। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের তান্ডবে এ উপজেলায়ম ৭ দশমিক ৭ কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।এছাড়া ৩৩০ কিলোমিটার ঝুকিপূর্ন হয়ে পড়েছে। এর ফলে পূর্নিমা,অমাবস্যা কিংবা অতিবৃষ্টি হলেই নদীর পারের এসব মানুষের দূর্ভোগ বেড়ে যায়। আর আকাশে মেঘ দেখলেই তারা আতঙ্কে থাকে। কারন সাগর পারের অভাবী মানুষগুলো স্বচক্ষে দেখেছে বিভিন্ন সময়ে বয়ে যাওয়া প্রলংকরী ঘুর্নিঝড়ের ভয়াবহতা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৭ সালের সিডরের পর গত ১৩ বছরে একাধিক ঝড়, জলোচ্ছাসে কলাপাড়া উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নের প্রায় ২০ হাজার মানুষ যুদ্ধ করে বেঁচে থাকলেও এবার ঘূর্ণিঝড় ইয়াস তান্ডবের পর যেন অসহায় হয়ে পড়েছে। ঝড়ের ঝাপটায় ঘরের কিছুটা ক্ষতি হলেও সেখানে এখন বসবাসের উপায় নেই। প্রতিদিন সকাল ও রাতে দুই বেলা রাবনাবাদ নদীর তোড়ে ভেঙ্গে যাওয়া বাঁধ দিয়ে পানি প্রবেশ করে প্লাবিত হচ্ছে। নদীর পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় অধিকাংশ গ্রামে দেখা দিয়েছে স্থায়ী জলাবদ্ধতা। এদিকে উপজেলার মহিপুর ইউনিয়নের নিজামপুর, কোমরপুর ও সুদিরপুর বেড়িবাঁধ চরম ঝুঁকিতে রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড তথ্যানুসারে, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের তান্ডবে উপজেলার মহিপুর ইউনিয়নের নিজামপুর পয়েন্টে এক দশমিক ৫০ কিলোমিটার, দেবপুর পয়েন্টে এক দশমিক ৫০ কিলোমিটার, গন্ডামারি পয়েন্টে দশমিক ৩০ কিলোমিটার, ধূলাসার পয়েন্টে দশমিক ৩৩৫ কিলোমিটার, পশরবুনিয়া পয়েন্টে দশমিক ১১ কিলোমিটার জোয়ারের পানির তোড়ে বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। এর মধ্যে মহিপুর ইউনিয়নের নিজামপুর পয়েন্টে ১ দশমিক ৫০ কিলোমিটার ও ধূলাসার পয়েন্টে দশমিক ৩৩৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ জরুরী সংস্কারের কাজ চলছে। বাকি বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে।
এর মধে লালুয়া ইউনিয়নের প্রায় ৭ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ সিডরের সময় বিধ্বস্ত হওয়ার পর থেকে আর সংস্কার করা হয়নি। বর্তমানে গোটা লালুয়া ইউনিয়ন ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের সময় থাকে। শুধু তাই নয়। বেড়িবাঁধ না থাকায় প্রতিদিন দু’বার জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যায়। প্রতিদিন দু’বার পানি ওঠা-নামা করায় এলাকার মাটির রাস্তাগুলো নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।
রাবনাবাদ নদী পড়ের বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব ফিরোজা বেগম বলেন, ৭০, ৯০’র বন্যা ২০০৭ সালের সিডর এরপর আইলা, মহাসেন, আম্পান ঝড় তারা মোকাবেলা করেছেন। কিন্তু এবার ঘূর্নিঝড় ইয়াস তাদের গৃহহারা করে ফেলেছে।
লালুয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো.শওকত হোসেন তপন বিশ^াস জানান, এ ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় অমাবস্যা ও পূনিমার জো’তে। জোয়ার-ভাটার কারনে লালুয়ার ২০ কিলোমিটার কাঁচা সড়ক অনেকটা মাটির সাথে মিশে গেছে। অরক্ষিত বেড়িবাঁধের কারনে ইউনিয়নের মানুষ সাগরে নি¤œচাপ সৃষ্টির খবর পেলেই থাকে আতঙ্কে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড খেপুপাড়া উপ-বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.হালিম সালেহী বলেন, অক্ষত বেঢ়িবাঁধগুলোর মধ্যে ৪৭/১ নম্বর পোল্ডারের নিজামপুর পয়েন্টে ১ দশমিক ৫০ কিলোমিটার, ৪৭/৪ নম্বর পোল্ডারের ধূলাসার পয়েন্টে দশমিক ৩৩৫ কিলোমিটার ও কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে জরুরী ভিক্তিতে সংস্কার কাজ চলছে। বাকি বেড়িবাঁধ পূনঃসংস্কার প্রকল্প প্রণয়ন চলছে। যা মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হবে। কুয়াকাটা স্থায়ী বীচ রক্ষা উন্নয়ন প্রকল্পে সাড়ে সাতশত কোটি টাকা চেয়ে মন্ত্রনালয়ে প্রেরন করা হয়েছে বলে তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন