সালিসে কৃষক লীগ নেতার হুমকি, হৃদ্রোগে বীর মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যু

প্রকাশিত: ৬:৩৯ অপরাহ্ণ, জুলাই ৪, ২০২১

সালিসে কৃষক লীগ নেতার হুমকি, হৃদ্রোগে বীর মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যু

পারিবারিক দ্বন্দ্ব মীমাংসার জন্য বরিশালের গৌরনদী উপজেলার উত্তর বিজয়পুর এলাকায় গতকাল শনিবার একটি সালিস বসেছিল। সেখানে কথা–কাটাকাটির একপর্যায়ে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার ওপর চড়াও হন গৌরনদী পৌর কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন উকিল (৫৫)। এরপর ঘটনাস্থলেই হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আলমগীর হোসেন ব্যাপারী (৬৬)।
মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের অভিযোগ, কৃষক লীগ নেতা আলমগীরের হুমকিতে একটি ঘরে আশ্রয় নিয়েছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আলমগীর ব্যাপারী। সেখানে হামলা চালিয়ে দরজা ভেঙে ঘরে ঢোকার চেষ্টা করা হয়। এ কারণে আতঙ্কিত হয়ে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হন তিনি।
এ ঘটনায় বাবার মৃত্যুর বিচার চেয়ে আজ রোববার গৌরনদী মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আলমগীর ব্যাপারীর ছেলে জাহিদ হোসেন (৪৫)। আলমগীর ব্যাপারী চাঁদশী ইউনিয়নের দক্ষিণ নাঠৈ গ্রামের বাসিন্দা। তিনি অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য ছিলেন।
জাহিদ হোসেন অভিযোগ করেন, উত্তর বিজয়পুর গ্রামে জাহিদের চাচা সিরাজুল ইসলাম ব্যাপারীর বাড়িতে পারিবারিক দ্বন্দ্ব মীমাংসার জন্য শনিবার বেলা ১১টার সালিস বৈঠক বসে। সেখানে যোগ দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আলমগীর হোসেন (৬৬), তাঁর ভাই মোক্তার হোসেন (৬০) ও ভাগনে কাঞ্চন সরদার (৪৫)। বৈঠকে কথা–কাটাকাটির একপর্যায়ে পৌর কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর উকিল বীর মুক্তিযোদ্ধা আলমগীর হোসেনের ওপর চড়াও হন এবং বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিয়ে মারতে উদ্যত হন। একপর্যায়ে আলমগীর ব্যাপারী প্রাণভয়ে আতঙ্কিত হয়ে সিরাজুল ইসলামের ঘরে আশ্রয় নেন। কৃষক লীগ নেতা আলমগীর হোসেন ওই ঘরের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন এবং দরজা ভেঙে ঘরের ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা চালান। এ সময় ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে আলমগীর হোসেন ব্যাপারী হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান।

সালিসে উপস্থিত কাঞ্চন সরদার বলেন, আলমগীর উকিলের কথার প্রতিবাদ করায় তিনি আলমগীর ব্যাপারীর ওপর চড়াও হন। প্রাণভয়ে দৌড়ে ঘরের মধ্যে আশ্রয় নিলে সেখানেও হামলা চালান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সালিসে উপস্থিত একাধিক ব্যক্তি বলেন, আলমগীর উকিল বেশি বাড়াবাড়ি করায় বীর মুক্তিযোদ্ধার মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটেছে।
অভিযোগ অস্বীকার করে কৃষক লীগ নেতা আলমগীর হোসেন উকিল বলেন, ‘অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই। তারপরও যা হয়েছে, তা আমি পারিবারকিভাবে মীমাংসা করে ফেলেছি।’ তবে বীর মুক্তিযোদ্ধার পরিবার মীমাংসার বিষয়টি অস্বীকার করেছে।
গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আফজাল হোসেন বলেন, রোববার মৃত আলমগীর হোসেন ব্যাপারীর ছেলে জাহিদ হোসেন ব্যাপারী লিখিত অভিযোগ করেছেন। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রথম আলো

সংবাদটি শেয়ার করুন