পটুয়াখালী প্রতিনিধি :: পটুয়াখালীর বাউফলে কিশোরী বধূ নাজনিনের স্বামী রমজানকে অপহরণের পর আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৯ জুন কনকদিয়া ইউনিয়নের চুনারপুল এলাকা থেকে চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদারের ক্যাডার হিসেবে পরিচিত সিজান নামের এক যুবক রমজানকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে পটুয়াখালী শহরের একটি বাসায় নিয়ে আটকে রাখে। পরে শনিবার ভোরে কৌশলে রমজান ওই বাসা থেকে পালিয়ে আসে।
রমজান বলেন, ‘আমার ভাই চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদারের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। মামলাটি বর্তমানে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্ত করছে। ওই মামলায় আমি যেন সাক্ষ্য না দেই তার জন্য চেয়ারম্যানের নির্দেশে আমাকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করা হয়। চার দিন আটকে রেখে আমার উপর নির্যাতন করা হয়েছে। কিল ঘুষি মেরে আমার কাছ থেকে স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছে। ওই স্বীকারোক্তির ভিডিও করা হয়েছে। এ ছাড়াও কয়েকটি কাগজে আমার কাছ থেকে সই নেয়া হয়েছে। আমাকে আটকে রাখার সময় সেজানের মুঠোফোনে কল দিয়ে চেয়ারম্যান শাহিন আমার সাথে কথা বলেন। তিনি প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে বলেন, ‘তুই এখন আমার নিয়ন্ত্রণে, প্রাণে বাঁচতে হলে সেজান যা বলে তাই কর।’
রমজান বলেন, ‘বর্তমানে আমি বগাবন্দরে আমার ভাইয়ের কাছে আছি। আমি খুবই অসুস্থ।’
রমজানের বড় ভাই আল ইমরান বলেন, চেয়ারম্যান মামলা তুলে নেয়ার জন্য আমাদেরকে হুমকি দিচ্ছে।
এদিকে চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদারের ড্রাইভার রুবেলের হাতে একটি পিস্তল থাকার ছবি নিয়ে এলাকায় তোলপাড় চলছে। সম্প্রতি হাতে একটি পিস্তল নিয়ে ছবি তোলেন রুবেল। চেয়ারম্যানের বিয়ের ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই পিস্তল নিয়ে ছবি তোলার বিষয়টি আবার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কনকদিয়া ইউনিয়নের এক আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘পিস্তলের ভয় দেখিয়ে চেয়ারম্যান ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে।’
তবে রুবেল দাবি করেন, ‘পিস্তলটি খেলনা, আসল নয়।’
রমজানকে অপহরণের বিষয়টি অস্বীকার করে চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার বলেন, ‘আমি যা বলার ঢাকায় সংবাদ সম্মেলনে বলেছি। এখন আমার কিছুই বলার নেই। আর আমার কোনো ড্রাইভার নেই।’
বাউফল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আল মামুন বলেন, ছবিতে পিস্তলটি খেলনা মনে হয়। তবে তদন্ত করে পিস্তলের রহস্য বের করা হবে।
উল্লেখ্য, অন্যের কিশোরী বধূকে প্রলোভন দেখিয়ে বিয়ে করে আলোচনায় আসেন বাউফলের কনকদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার। বিষয়টি নিয়ে সারাদেশে তোলপাড় হওয়ার পর চেয়ারম্যানকে সাময়িকভাবে বরাখাস্ত করা হয়। বিয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট কনকদিয়া ও নাজিরপুর ইউনিয়নের দুই কাজী এখনো বহাল তবিয়তে থাকায় সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
<p>সম্পাদক: কাজী মফিজুল ইসলাম</p>
Copyright © 2025 বরিশাল প্রতিদিন. All rights reserved.