পুলিশের ভাষায় এটি ই কমার্সের মিনি ভার্সণ ॥ স্বামী-স্ত্রী ও ছেলেসহ জন আটক

প্রকাশিত: ৫:৫৩ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৬, ২০২১

পুলিশের ভাষায় এটি ই কমার্সের মিনি ভার্সণ ॥ স্বামী-স্ত্রী ও ছেলেসহ জন আটক

বরিশাল বিমান বন্দর থানার কর্মকর্তারা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জানালেন ই কমার্সের মিনি ভার্সনের প্রতারণার সংবাদটি। তারা তিন মিনি ই-কমার্স প্রতারককে আটক করেছে । আটককৃতরা হলেন- বিএমপি কাউনিয়া থানাধীন কাগাশুরা ৩ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মৃত বারেক শেখের মেয়ে মোসাঃ শাহিনুর বেগম (৪৩) তার স্বামী আমিনুল ইসলাম সুমন মোল্লা (৩৬) ও তাদের ছেলে শাহারিয়ার ইসলাম শাকিল (১৭)। এরা কম মূল্যে কিস্তিতে দামি পন্য এবং ্র্ণ দেবার কথা বলে দরিদ্র মানুষের কাছ থেকে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে।
বুধবার (৬ অক্টোবর) দুপুরে বিএমপি এয়ারপোর্ট থানায় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) মোঃ জাকির হোসেন মজুমদার এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন এটি ই কমার্স প্রতারণার মিনি ভার্ষন এটি।
উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) মোঃ জাকির হোসেন মজুমদার জানান, বরিশালের কাউনিয়া থানার কাগাশুরায় বারেক শেখ সুপার মার্কেটে “বন্ধু জন ফার্নিচার মেলা এন্ড ভ্যারাইটিজ স্টোর” নামে একটি দোকান খুলে মোসাঃ শাহিনুর বেগম (৪৩) তার স্বামী আমিনুল ইসলাম সুমন মোল্লা (৩৬) ও তাদের ছেলে শাহারিয়ার ইসলাম শাকিল(১৭) গত ১ বছর যাবত ফার্নিচার, গ্রোচারী জিনিস কম মূল্য কিস্তির মাধ্যমে দিবে বলে প্রচার করে। নিরিহ দরিদ্র মানুষকে প্রলোভন দেখিয়ে এ পর্যন্ত প্রায় ৫০০ থেকে ১০০০ মানুষের কাছ থেকে সপ্তাহে ২০০ টাকা আবার কারো কারো কাছ থেকে প্রতিদিন ৫০ টাকা নিয়ে এর মধ্যে দু একজনকে তারা কিছু পন্য দেন। বাকীদেরকে আর কোন পন্য না দেয়ায় গ্রােহকরা টাকা ফেরত চান। কিন্তু টাকা না দিয়ে এরা তিনমাস যাবৎ গা ঢাকা দেন। এভাবে গত ১ বছরে তার গ্রাহকের কাছ থেকে কম দামে পন্য দেয়ার নাম করে তারা আনুমানিক ২০ থেকে ৩০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) মোঃ জাকির হোসেন মজুমদার জানান, এটা হচ্ছে ই কমার্সের মিনি ভার্সন। তারা মানুষকে গিয়ে বলতো কোন জিনিষের সম্পূর্ন মূল্য পরিশোধ করতে না পারলে তাদের কাছে অল্প অল্প করে অর্ধেক মূল্য জমা দিয়ে মালামাল নিতে পারবেন। এবং বাকি মূল্য মালামাল নেয়ার পর আবার অল্প অল্প করে কিস্তিতে পরিশোধ করতে পারবেন। আরো বলে ৫ হাজার টাকা জমা হলে ১ লাখ টাকা লোন নিতে পারবেন। তাদের এসব কথায় বিশ্বাস করে বিএমপি এয়ারপোর্ট থানাধীন কাশীপুর ইউনিয়নের পূর্ববিল্ববাড়ী গ্রামের বাসিন্দা মোঃ ইউসুফ হাওলাদারের স্ত্রী লাইলী আক্তার প্রতিদিন ১০ টাকা, ২০ টাকা, ৩০ টাকা করে চলতি বছরের ২৭ ফেব্রয়ারি থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৩৫৫০ টাকা জমা দিয়েছেন। এখন তাকে পণ্য বা টাকা ফেরত না দেয়ায় তিনি বাদী হয়ে এ তিন জনের নামে একটি প্রতারনা ও আত্মসাতের মামলা দায়ের করেছেন। এছাড়াও আরো অনেক ভুক্তভোগী আছেন যারা আরও মামলা দিতে চাচ্ছেন। এরই প্রেক্ষিতে সোমবার (৪ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১০ টার দিকে মোসাঃ শাহিনুর বেগম, তার স্বামী আমিনুল ইসলাম সুমন মোল্লা ও তাদের ছেলে শাহারিয়ার ইসলাম এলাকায় এলে ভুক্তভোগীরা টাকা দাবি করে। এ সময় তারা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাদের আটকে রেখে এয়ারপোর্ট থানা পুলিশকে খবর দিলে উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) মোঃ জাকির হোসেন মজুমদারের নির্দেশে পুলিশ তাদেরকে আটক করে নিয়ে আসে।
উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) মোঃ জাকির হোসেন মজুমদার জানান, আটক আসামীদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে এ ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। এর মধ্য থেকে শাহারিয়ার ইসলাম শাকিল (১৭) কে সমাজ সেবা অফিসের প্রবেসন অফিসারের জিম্মায় দেয়া হয়েছে। বাকী দুজনকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএমপি অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মোঃ ফজলুল করিম ফজলু, কাউনিয়া ও এয়ারপোর্ট থানার সহকারী পুলিশ কমিশনার মোঃ রবিউল ইসলাম শামীম, এয়ারপোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ কমলেস চন্দ্র হালদার প্রমুখ।

সংবাদটি শেয়ার করুন