আরেকটি স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের

প্রকাশিত: ৬:০৪ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৩, ২০২১

আরেকটি স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের

উন্নয়নের মহাসড়কে আরও একটি স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের। পটুয়াখালীতে দেশের চতুর্থ বৃহত্তম পায়রা সেতু আগামীকাল রোববার যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হচ্ছে। সেতুটি চালু হলে বরিশাল, খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের সঙ্গে পর্যটন নগরী কুয়াকাটা ও পায়রা বন্দর পর্যন্ত সড়ক পথ হবে ফেরিবিহীন। যোগাযোগ ব্যবস্থা, পণ্য পরিবহন এবং পর্যটনের নতুন দ্বার উন্মোচন হয়ে অর্থনীতিতে গতি আসবে এই অঞ্চলের মানুষের।

সরেজমিনে দেখা যায়, পায়রা নদীর বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে চার লেনের লেবুখালী পায়রা সেতু। পটুয়াখালী-বরিশাল মহাসড়কের লেবুখালী পয়েন্টে পায়রা নদীতে পায়রা সেতু নির্মাণ প্রকল্প একনেকে অনুমোদন পায় ২০১২ সালে। নকশা জটিলতায় দীর্ঘ সময় কাজ বন্ধ থাকলেও নির্মাণযজ্ঞ শেষ করে এখন যান চলাচলের জন্য প্রস্তুত এই সেতু। ১ হাজার ৪৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৬ সালে ২৪ জুলাই সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু করে চীনের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান লংজিয়ান রোড এন্ড ব্রিজ কোম্পানি লিমিটেড।

নান্দনিক নির্মাণশৈলীতে দ্বিতীয় কর্নফুলি সেতুর আদলে করা প্রায় দেড় কিলোমিটার দৈর্ঘ্যে ও ২০ মিটার প্রস্থের সেতুর মাঝ বরাবর একটি মাত্র পিলার বসানোর ফলে নদীর গতিপথ থাকবে সচল। দুই পাড়ে প্রায় ৭ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক ও আধুনিক টোল প্লাজা নির্মাণ করা হয়েছে। রাখা হয়েছে ওজন পরিমাপের ব্যবস্থা। সেতুটি চালু হলে এর কোনো সমস্যা হচ্ছে কিনা তা নির্ণয়ের জন্য সচল থাকবে ব্রিজ হেলথ মনিটরিং সিষ্টেম। আধুনিক এ সেতু চালু হওয়ায় খুশি দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ।

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী সাগর, সুজনী বিদ্যানিকেতনের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী সুমাইয়া, স্থানীয় ব্যবসায়ী আলী আকবরসহ একাধিক মানুষ জানান, অত্যাধুনিক এ স্থাপনা নির্মাণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার প্রতি চির কৃতজ্ঞ এ অঞ্চলের মানুষ।

পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা কাজী আলমগীর জানান, দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের কাঙ্ক্ষিত একটি স্বপ্ন পূরণ করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার প্রতি এ অঞ্চলের মানুষের কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে এ অঞ্চলের মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা এখন সহজ হবে।

পায়রা লেবুখালী সেতু প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল হালিম জানান, দীর্ঘ কর্মযজ্ঞ শেষে পায়রা সেতু এখন সম্পূর্ণ প্রস্তুত যান চলাচলের জন্য। এটি অত্যাধুনিক একটি সেতু। পদ্মা সেতু চালু হলে সারা দেশের সঙ্গে এই সেতু চালুর মাধ্যমে কুয়াকাটা পর্যন্ত ফেরিবিহীন যান চলাচলের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে। এ ছাড়া পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটাকে ঘিরে পর্যটন শিল্পের প্রসার ঘটবে।

তিনি আরও জানান, পর্যটন শিল্পের পাশাপাশি এ সেতু চালু হলে পায়রা বন্দরের মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্যের নতুন দ্বার উন্মুক্ত হবে এবং পটুয়াখালী তৃতীয় অর্থনৈতিক করিডোরে রূপান্তরিত হবে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন জানান, পায়রা সেতু চালুর ফলে পায়রা বন্দর, পর্যটন নগরী কুয়াকাটা, নির্মাণাধীন পটুয়াখালী ইপিজেডসহ দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জীবনমান পাল্টে যাবে। কৃষি এবং মৎস্য শিল্পে হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হবে। কুয়াকাটা পর্যটন নগরী হবে ঢাকার সবচেয়ে কাছের সমুদ্র সৈকত। আগামী দিনে পটুয়াখালী দেশের তৃতীয় অর্থনৈতিক করিডোর হিসেবে আর্বিভূত হবে বলে জানান তিনি।

সংবাদটি শেয়ার করুন