ঢাকা ১৯শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৪ঠা শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৪শে মহর্রম, ১৪৪৭ হিজরি
প্রকাশিত: ৭:১৬ অপরাহ্ণ, জুন ৩০, ২০২৫
ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলায় চাঁদার জন্য মো. রুবেল নামের এক যুবককে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় শ্রমিক দল ও ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে। এ সময় ভুক্তভোগীর স্ত্রী তাকে বাঁচাতে গেলে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মাওলানাকান্দি এলাকায়। এ ঘটনায় সোমবার (৩০ জুন) রুবেল বাদী হয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৪-৫ জনকে আসামি করে তজুমদ্দিন থানায় একটি মামলা করেছেন।
এর আগে গত রবিবার সন্ধ্যায় বাদীর স্ত্রী আত্মহত্যার চেষ্টা করলে জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল পেয়ে তাকে উদ্ধার করে তজুমদ্দিন থানা পুলিশ।
মারধরের শিকার মো. রুবেল জানান, তিনি দুই বিয়ে করেছেন। বড় স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকায় থেকে সেখানে খাবার হোটেলে কর্মচারী হিসেবে কাজ করছেন। আর ছোট স্ত্রী তজুমদ্দিনে থাকেন।
কিছু দিন আগে তিনি বড় স্ত্রীকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে আসেন। এরপর গত শনিবার দিবাগত রাতে তার ছোট স্ত্রী তাকে বাসায় ডেকে নেয়।
পরে রাতে খাবার খাওয়ার সময় উপজেলা শ্রমিক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. ফরিদ উদ্দিন ও তজুমদ্দিন সরকারি কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক মো. রাসেলের নেতৃত্বে একদল লোক ঘরে ঢুকে তাকে মারধর করে। এ সময় ছোট স্ত্রী তার সঙ্গে আর সংসার করবে না বলে তার কাছ থেকে ৪ লাখ টাকা দাবি করে তারা।
টাকা দিতে অস্বীকার করলে তাকে আটকে রেখে রাতভর নির্যাতন চালায়। এক পর্যায়ে তার বড় স্ত্রীকে টাকা নিয়ে এসে স্বামীকে ছাড়িয়ে নিতে বলা হয়।
ভুক্তভোগী জানান, পরদিন রবিবার সকালে বড় স্ত্রী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে তার কাছে স্বামীকে ছাড়িয়ে নিতে চার লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। চাঁদা দিতে অসম্মতি জানালে আবারও স্বামী রুবেলকে এসএস পাইপ ও রড দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করা হয়।
এক পর্যায়ে দুপুর ১২টার দিকে একজন রুবেলকে বাইরে নিয়ে যায়।
কিছুক্ষণ পর রুবেল এসে ঘরের দরজা বন্ধ দেখে ডাকাডাকি করলে শ্রমিক দল নেতা ফরিদ দরজা খুলে তাকে দমক দেয়। পরে সে ঘরে ঢুকে দেখেন বড় স্ত্রী কান্না করছে। পরে জানতে পারেন তাকে পালাক্রমে তারা ধর্ষণ করেন।
রুবেল আরো জানান, এ ঘটনার পর তাদের স্বামী-স্ত্রী দুজনকে ভয়ভীতি দেখিয়ে এই ঘটনা কাউকে না বলার শর্তে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পরে রবিবার সন্ধ্যায় বড় স্ত্রী দুবার আত্মহত্যার চেষ্টা করলে আশপাশের লোকেরা তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় মুচিবাড়িরকোনা বাজারে এনে সবাইকে ঘটনাটি জানায়। এরপর ভুক্তভোগী নারী জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে পুরো ঘটনার বিবরণ জানালে রাতে পুলিশ এসে তাদেরকে থানায় নিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত উপজেলা শ্রমিক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. ফরিদ উদ্দিনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করার চেষ্টা করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে অপর অভিযুক্ত তজুমদ্দিন সরকারি কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক মো. রাসেল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি ঘটনার দিন সেখানে ছিলেন না। ফেসবুকের মাধ্যমে ঘটনাটা জেনেছি। আমাকে রাজনৈতিকভাবে একটি পক্ষ এ ঘটনার সঙ্গে জড়ানোর চেষ্টা করছে।
তজুমদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোহাব্বত খান জানান, এ ঘটনায় ভিকটিমের স্বামী বাদী হয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি মামলা করেছেন। মামলায় দুজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, একজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের সহায়তা ও তিনজনের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ আনা হয়েছে।
প্রকাশকঃ ডাক্তার জি.কে চক্রবর্তী।
সম্পাদকঃ কাজী মফিজুল ইসলাম।
প্রধান সম্পাদকঃ নুসরাত রসিদ।
নির্বাহী সম্পাদকঃ জাকিরুল মোমিন।
মোবাইলঃ 01711225620
মেইলঃ protidin.barisal@gmail.com
ঠিকানাঃ প্যারারা রোড, বরিশাল ৮২০০।
Design and developed by Engieer BD Network