বরগুনায় আবার বেপরোয়া কিশোর গ্যাং

প্রকাশিত: ৭:৫০ অপরাহ্ণ, মে ১৯, ২০২১

বরগুনায় আবার বেপরোয়া কিশোর গ্যাং

বরগুনায় আবার বেপরোয়া হয়ে উঠেছে কিশোর গ্যাং। আমতলী সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সারারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী রাহাত মৃধা নামের এক ছাত্রলীগ নেতাসহ পাঁচজনকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করার অভিযোগ উঠেছে এই কিশোর গ্যাং এর বিরুদ্ধে। কিশোর গ্যাংলিডার শাহাবুদ্দিন শিহাব ও তার সহযোগীরা এ হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ।

মঙ্গলবার (১৮ মে) রাত সাড়ে ৯টার দিকে আমতলী পৌরসভার কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্র জানায়, আমতলী সরকারি কলেজ ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী রাহাত মৃধার বন্ধু বেলাল হোসেন বাপ্পির সঙ্গে কিশোর গ্যাং সদস্য ইমরান মোল্লার গত সোমবার তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে বিরোধ হয়। ওই বিরোধ মীমাংসার জন্য মঙ্গলবার রাতে বন্ধুর পক্ষ হয়ে রাহাত মৃধা কিশোর গ্যাং সদস্য ইমরানকে ফোন দেন। ইমরানের ফোন কিশোর গ্যাং লিডার শাহাবুদ্দিন শিহাব কেড়ে নিয়ে রাহাতকে হাত কেটে নেয়ার হুমকি দেয়। বিষয়টি তাৎক্ষণিক মীমাংসার জন্য ওই রাতেই ছাত্রলীগ নেতা রাহাতের মামা সেলিম তাদের আমতলী কেন্দ্রিয় ঈদগাহে ডেকে নেন।

মামার ডাকে রাহাদ মৃধা তার ভাই ফরহাদ মৃধা ও বন্ধু বেলাল হোসেন বাপ্পি ঈদগাহে যান। সেখানে আগে থেকেই ওত পেতে থাকা কিশোর গ্যাং লিডার শাহাবুদ্দিন শিহাব, ইমরান মোল্লা, নোমান মোল্লা, মিরাজুল ইসলাম মিরাজ ও মেহেদিসহ ১০-১৫ জন ছাত্রলীগ নেতা রাহাত, তার ভাই ফরহাদ, মামা সেলিম, বন্ধু বেলাল হোসেন বাপ্পি ও কালুকে চাপাতি, হাতুড়ি ও রামদা দিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন। খবর পেয়ে কাউন্সিলর রিয়াজ উদ্দিন মৃধা ঘটনাস্থলে গিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় রাহাত মৃধা ও তার ভাই ফরহাদ মৃধাসহ আহতদের উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন।

বুধবার (১৯ মে) আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা গেছে, রাহাত মৃধার মাথায় ব্যান্ডেজ এবং তার ভাই ফরহাদের সারা শরীরে রক্তাক্ত জখমের চিহৃ।
আহত ছাত্রলীগ নেতা রাহাত মৃধা বলেন, কিশোর গ্যাং লিডার শাহাবুদ্দিন শিহাব, ইমরান মোল্লা, নোমান মোল্লা, মিরাজুল ইসলাম মিরাজ ও মেহেদিসহ ১০-১৫ জন কিশোর সন্ত্রাসী আমাকে কুপিয়েছে এবং আমার ভাইকে চাপাতি ও হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করেছে। তিনি আরও বলেন, আমাদের রক্ষায় আমার মামা সেলিম, খালু এগিয়ে গেলে তাদেরও মারধর করা হয়েছে।

এ বিষয়ে কিশোর গ্যাং লিডার শাহাবুদ্দিন শিহাব মারধরের কথা অস্বীকার করে বলেন, একটু ঝামেলা হয়েছে।

আমতলী পৌরসভার কাউন্সিলর মো. রিয়াজ উদ্দিন মৃধা বলেন, খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গিয়ে রাহাত, ফরহাদ, বাপ্পিসহ আহতদের উদ্ধার করে আমতলী হাসপাতালে ভর্তি করার ব্যবস্থা করি।

তিনি বলেন, কিশোর গ্যাং লিডার শাহাবুদ্দিন শিহাব, ইমরান মোল্লা ও তার সাঙ্গ-পাঙ্গদের অত্যাচারে সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ। দ্রুত এদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া দরকার।

আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, রাহাদের মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত এবং ফরহাদের সারা শরীরে রক্তাক্ত জখমের চিহৃ রয়েছে।

আমতলী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রনজিত কুমার সরকার বলেন, খবর পেয়ে হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়। তবে এ বিষয়ে এখনো কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তিনি আরও জানান, কিশোর গ্যাং সদস্যদের তালিকা তৈরি হচ্ছে। তালিকা তৈরির পর তাদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন