ঢাকা ৭ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২২শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৫ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৪:২৫ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১০, ২০২১
মহামারিতে গত ১৮ মাস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে মানসিক সমস্যা। এতে আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ায় গত ১৫ মাসে দেশে ১৫১ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে।
আজ বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস। এবারের প্রতিপাদ্য ‘কাজের মাধ্যমে প্রত্যাশা বৃদ্ধি’। এ দিবস উপলক্ষ্যে “শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য ও করণীয়” শীর্ষক কাউন্সেলিং অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কল্যাণ ও পরামর্শদান কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক (মনোবিজ্ঞানী) ইফরাত জাহান আত্মহত্যার কারণ ও প্রতিকারসহ বিভিন্ন তথ্য উপস্থাপন করেন।
আত্মহত্যার কারণ হিসেবে পড়াশোনার চাপ, বেকার সমস্যা, বৈবাহিক সমস্যা, প্রেমে ব্যর্থ, মানসিক নির্যাতন, পারিবারিক সমস্যা, অবসাদ ও বিষন্নতাকেই প্রধানত চিহ্নিত করা হয়েছে। সম্প্রতি আঁচল ফাউন্ডেশনের চালানো এক জরিপে এমন তথ্য ওঠে আসে।
জরিপের তথ্য মতে, ২০২০ সালের ১৭ ই মার্চ হতে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত দেশে ১৫১ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন। যদিও এ সংখ্যা ২০১৮ সালে ১১ জন এবং ২০১৭ সালে ১৯ জন ছিল। এর মধ্যে ৪২ জন ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী। এছাড়া ২৭ জন কলেজ, ৭৩ জন স্কুল ও ৯ জন মাদ্রাসার শিক্ষার্থী।
জরিপে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি পরিসংখ্যান দেখানো হয়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে গত দশ বছরে ১১ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেন। যার মধ্যে ৬ জন ছাত্রী ও ৫ জন ছাত্র।
২০১০ সালে ২ জন, ২০১১ সালে ২ জন, ২০১২ সালে ২ জন, ২০১৫ সালে ১ জন, ২০১৭ সালে ১ জন, ২০১৯ সালে ২ জন ও ২০২০ সালে ১ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করে। এই ১১ জনের মধ্যে ৬ জন অবিবাহিত, ৪ জন বিবাহিত ও একজন তালাক প্রাপ্ত ছিলেন।
এদের মধ্যে প্রথম বর্ষের ১ জন, তৃতীয় বর্ষের ২ জন, চতুর্থ বর্ষে ১ জন, স্নাতকোত্তরের ৩ জন এবং স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করা ৩ জন শিক্ষার্থী ছিলেন।
জরিপে দেখা যায়, তিন জন ক্যাম্পাসে, ২ জন স্বামীর বাসায়, ৩ জন মেসে এবং ৩ জন বাড়ির বাইরে আত্মহত্যা করেন। যার মধ্যে ৭ জন গলায় ফাঁস দিয়ে, ২ জন উঁচুস্থান থেকে লাফিয়ে, ১ জন বিষক্রিয়ায় এবং ১ জন পানিতে ডুবে আত্মহত্যা করেন।
জরিপে আত্মহত্যা প্রতিরোধে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বেশকিছু সুপারিশ করা হয়। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বিভিন্ন বিভাগ এবং আবাসিক হলগুলোতে সচেতনতামূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন, বিশ্ববিদ্যালয়ে পেশাদার সাইকোলজিস্ট এর সংখ্যা বৃদ্ধি, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্রে সাইকিয়াট্রিস্ট নিয়োগ এবং প্রতিটি আবাসিক হলে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করা।
জরিপের বিষয়ে শিক্ষার্থী কল্যাণ ও পরামর্শদান কেন্দ্র এর সহকারী পরিচালক (মনোবিজ্ঞানী) ইফরাত জাহান বলেন, ‘প্রতি বছর ৭ লক্ষ মানুষ আত্মহত্যা করে। এর মধ্যে ৭৭% ঘটনা মধ্যম আয়ের দেশে সংগঠিত হয়। বাংলাদেশ এর মধ্যে অন্যতম। আবার দেশের সামগ্রিক জনগোষ্ঠীর তুলনায় বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়ারা অনেক বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। মহামারিতে এ প্রবণতা খুব দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে মানসিক স্বাস্থ্য ও আত্মহত্যা নিয়ে এখনই সচেতনতার উপযুক্ত সময়।’
প্রকাশকঃ ডাক্তার জি.কে চক্রবর্তী।
সম্পাদকঃ কাজী মফিজুল ইসলাম।
প্রধান সম্পাদকঃ নুসরাত রসিদ।
নির্বাহী সম্পাদকঃ জাকিরুল মোমিন।
মোবাইলঃ 01711225620
মেইলঃ protidin.barisal@gmail.com
ঠিকানাঃ প্যারারা রোড, বরিশাল ৮২০০।
Design and developed by Engieer BD Network