ময়মনসিংহ সড়কে দুই সপ্তাহে ঝরল ২২ প্রাণ

প্রকাশিত: ২:৫৪ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২২, ২০২০

ময়মনসিংহ সড়কে দুই সপ্তাহে ঝরল ২২ প্রাণ

দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ময়মনসিংহের সড়কে পৃথক দুর্ঘটনায় ঝরে গেল ২২টি তাজা প্রাণ। কিছুতেই যেন থামছে মৃত্যুর মিছিল। গত ৮ আগস্ট মুক্তাগাছার সড়কে প্রাণ হারায় ৭ সিএনজি আরোহী। এছাড়া গত ১৮ আগস্ট ফুলপুর উপজেলার বাঁশাটি এলাকায় মাইক্রোবাস পুকুরে পড়ে শিশুসহ ৮ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। সে শোক কাটতে না কাটতেই শনিবার (২২ আগস্ট) সকালে ভালুকা উপজেলার ডিগ্রি কলেজের সামনে প্রাইভেটকার-বাস সংঘর্ষে ঝরে পড়ে ৬টি প্রাণ এবং একই দিন ভোরে নান্দাইল উপজেলার তষনায় দুই ট্রাকের সংঘর্ষে মারা যান আরও দুজন।

পৃথক এ চারটি দুর্ঘটনা ময়মনসিংহবাসীকে অনেকটা বাকরূদ্ধ করেছে। ময়মনসিংহের সড়কে এ মৃত্যুর মিছিল ক্রমেই দীর্ঘ হয়ে চলছে। এখনি সময় সড়কে নিয়ন্ত্রণহীনতা ও অসচেতনতার লাগাম টেনে ধরার। একই সাথে সংকোচিত এই মহাসড়ক গুলোর পরিধি বাড়াতে দায়িত্বশীলদের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন সচেতন মহল।

মুক্তাগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপ্লব কুমার বিশ্বাস, ফুলপুর থানার ওসি ইমারত হোসেন গাজী, ভালুকা মডেল থানার ওসি মঈন উদ্দিন ও নান্দাইল থানার ওসি মনসুর আহমেদ এসব তথ্য সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

মুক্তাগাছা থানার ওসি বিপ্লব কুমার বিশ্বাস জানান, গত ৮ আগস্ট উপজেলারর মানকুন এলাকায় যাত্রীবাহী বাস ও সিএনজি চালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে একই পরিবারের ৩ জনসহ ৭ জন নিহত হয়। এদের মধ্যে ২জন নারী ও ৫ জন পরুষ রয়েছেন। এ ঘটনায় পুলিশ দুর্ঘটনাকবলিত সিএনজি-বাস থানা হেফাজতে নিয়ে আসে।

ফুলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমারত হোসেন গাজী জানান, ১৮ আগস্ট সকালে ভালুকা থেকে ছেড়ে আসা একটি মাইক্রোবাস শেরপুরের নালিতাবাড়িতে যাচ্ছিল। পরে উপজেলার বাঁশাটি এলাকায় মাইক্রোবাসটি পৌছলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পুকুরে পড়ে যায়। এসময় শিশুসহ ৮ জনের প্রাণহানি হয়।

ভালুকা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঈন উদ্দিন জানান, শনিবার সকালে হালুয়াঘাট থেকে ছেড়ে আসা ইমাম পরিবহনের যাত্রীবাহী একটি বাস ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ভালুকা উপজেলার কলেজের সামনে পৌছলে প্রাইভেটকারের সাথে মুখোমুখি ধাক্কা লাগে। এ সময় শিশুসহ ৬ জন ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। মৃতদের মধ্যে ২ জন শিশু, ২ জন নারী ও ৩ জন পুরুষ রয়েছেন। মরদেহ উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

অন্যদিকে নান্দাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুনসুর আহমেদ জানান, ভোর ৫ টার দিকে উপজেলার তষরায় গরু বোঝাই একটি ট্রাকের সঙ্গে অপর একটি ট্রাকের সংঘর্ষ হয়। এ সময় ঘটনাস্থলেই ২ জনের মৃত্যু হয়। আহত হয়েছেন আরও ১ জন।

এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার মোহ. আহমার উজ্জামান বলেন, ময়মনসিংহ জেলার রাস্তাগুলো সঙ্কুচিত হওয়ার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটছে। রাস্তাগুলো প্রসস্ত করতে হবে। এ ছাড়া চালকদের অসচেতনতা ও বেপরোয়া গাড়ি চালানো বন্ধ করতে হবে। একই সঙ্গে অতিরিক্ত যাত্রী বহনের বিষয়ও নজরে আনতে হবে। তাছাড়া মহাসড়কে উল্টো পথে গাড়ি চলা, ট্রাফিক আইন না মানা ও সড়কের গতিরোধক না থাকায় এ দুর্ঘটনার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এ ব্যাপারে মাঠে কাজ করছে। চালকসহ সাধারণ মানুষকে আরও সচেতন হতে হবে। তাহলেই দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা মিলবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন