এমপি ফিরোজের সামনেই আ.লীগের ২ গ্রুপের সংঘর্ষ

প্রকাশিত: ১১:০৩ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৭, ২০২১

এমপি ফিরোজের সামনেই আ.লীগের ২ গ্রুপের সংঘর্ষ

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভা চলাকালে এমপি আ স ম ফিরোজের সামনেই দুই গ্রুপের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে বগা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, ছাত্রলীগ, যুবলীগকর্মী ও সাংবাদিকসহ অন্তত ২০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

গুরুতর আহত অবস্থায় বগা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহামুদ হাসান (৩৫), যুবলীগ নেতা জসিম (৩৪), মিজান মোল্লা (৪০), সুমন (৩০) ও আশ্রাফকে (২৮) বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সোমবার বিকাল সোয়া ৪টার দিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় জনতা ভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটেছে।

ঘটনার সময় জনতা ভবনের ভেতরে ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাতীয় সংসদের সাবেক চিফ হুইপ এবং বর্তমান পটুয়াখালী-২ (বাউফল) আসনের এমপি আ স ম ফিরোজ এমপি।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আসন্ন বাউফল পৌরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রার্থী বাছাইয়ের উদ্দেশ্যে সোমবার বিকাল ৩টায় আওয়ামী লীগ কার্যালয় জনতা ভবনে বিশেষ বর্ধিত সভা আহ্বান করা হয়। ওই সভায় জাতীয় সংসদের সাবেক চিফ হুইপ ও স্থানীয় এমপি আ স ম ফিরোজ, দলের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব হাওলাদার, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ইব্রাহীম ফারুকসহ কয়েকশ নেতাকর্মী ও সমর্থক উপস্থিত ছিলেন।

সভায় প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান মোতালেব হাওলাদার ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে মতবিরোধ দিলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

বিকাল সোয়া ৪টার দিকে চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক আলকাস মোল্লা বক্তব্য শুরু করেন। এ সময় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী আলমগীর হোসেন মোবাইল ফোনের মাধ্যমে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন।

তখন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোতালেব হাওলাদার চেয়ারম্যান এনামুল হক আলকাস মোল্লাকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘আপনি তো বহিষ্কৃত নেতা, আপনার বক্তব্য দেওয়ার প্রয়োজন নেই। এখন মোবাইল ফোনে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বক্তব্য দিবেন। আপনি বসেন।’

এ সময় চেয়ারম্যান আলকাস মোল্লা দলের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে দলীয় কার্যালয়ের ভেতরে ও বাইরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। মুহূর্তেই দলীয় কার্যালয়ের বাইরে লাঠিসোটা ও ইটপাটকেল নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। ওই সংঘর্ষে কমপক্ষে ২০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।

মারামারির দৃশ্য ধারণ করতে গিয়ে মাইটিভির বাউফল প্রতিনিধি অহিদুজ্জামান ডিউক ও যুগান্তর প্রতিনিধি জিএম মশিউর রহমান মিলন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এ সময় সাংবাদিক মিলনের মোবাইল ফোনটি ছিনিয়ে নিয়ে ধারণকৃত ভিডিও মুছে ফেলা হয়। পরে মোবাইল ফোনটি ফেরত দেওয়া হয়।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বর্তমানে পৌরশহরে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

প্রসঙ্গত, বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে এমপি আ স ম ফিরোজ ও উপজেলা চেয়ারম্যান মোতালেব হাওলাদারের মধ্যে বিরোধ চলছে। ওই বিরোধকে কেন্দ্র করে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে অস্থিরতা বিরাজ করছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন