ঢাকা ৯ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৬ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৬:৩১ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২০, ২০২২
বরিশালের আগৈলঝাড়ায় দাম্পত্য কলহের জের ধরে স্ত্রী রাশিদা বেগমকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে নৃশংশভাবে হত্যার পর মহাসড়কের পাশে মরদেহ ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর নামে। এছাড়া স্ত্রীকে হত্যার পর এক বছরের শিশু সন্তানকে অন্যত্র ফেলে পালিয়ে যায় সে।
এ ঘটনার পর পুলিশ রাশিদা বেগমের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের মর্গে পাাঠিয়েছে।
সেই সঙ্গে মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই খুনি তামিম শেখকে গোপালগঞ্জ জেলার বেদগ্রাম এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তামিম শেখ পুলিশের কাছে হত্যার দায় স্বীকার করেছে, সেইসাথে থানায় হত্যা মামলাও দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আগৈলঝাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গোলাম ছরোয়ার।
তিনি জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে বুধবার দিবাগত রাত সোয়া একটার দিকে আগৈলঝাড়া উপজেলার বাইপাস মহাসড়কের পাশে একটি ঘেরের পাড় থেকে এক নারীর রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
তিনি আরও জানান, মরদেহ উদ্ধারের সময়ে শিশুর কান্নার আওয়াজ পায় পুলিশ সদস্যরা। পরে তল্লাশি চালিয়ে মায়ের মরদেহের মাত্র ৫ শত গজ দূরে সড়কের পাশ থেকে দশ মাস বয়সী এক শিশুকে উদ্ধার করা হয়।
পরে অনুসন্ধান চালিয়ে জানা গেছে, মরদেহটি আগৈলঝাড়া উপজেলার নগড়বাড়ি গ্রামের মৃত করিম শাহর মেয়ে রাশিদা বেগম (৩৫) এর এবং ১০ মাসের শিশুটি তারই সন্তান, নাম তানিম।
ওসি আরও জানান, মরদেহ উদ্ধারের পরপরই ঘটনার পারিপার্শিক অবস্থা দেখে নিহত রাশিদার স্বামীর বাড়িতে অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দেওয়া হয়।
আগৈলঝাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাজহারুল ইসলাম জানান, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নির্দেশে অভিযান চালিয়ে ৩ ঘণ্টার মধ্যে পার্শ্ববর্তী গোপালগঞ্জ জেলার বেদগ্রাম থেকে নিহত রাশিদার স্বামী তামিম শেখকে রক্তমাখা জুতা, জামাপড়া অবস্থায় গ্রেফতার করা হয়। সে ওই এলাকার আনোয়ার শেখের ছেলে এবং বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ব্যবসা ও কাজ করেন।
তিনি জানান, গ্রেফতারের পর বৃহষ্পতিবার (২০ জানুয়ারি) সকালে তামিম পুলিশের কাছে অকপটে স্ত্রী রাশিদা বেগমকে হত্যার দায় স্বীকার করেছে। দুপুরে তাকে নিয়ে পুলিশ হত্যার ঘটনাস্থল বেদগ্রাম পরিদর্শনসহ এ ঘটনায় ব্যবহৃত হাতুড়ি ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান চালায়। পরে তাকে আদালতে হাজির করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
ঘাতক স্বামীর বরাত দিয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম ছরোয়ার জানান, প্রাথমিকভাবে যেটুকু বোঝা যাচ্ছে দাম্পত্য কলহের জের ধরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। নিহত রাশিদা এবং ঘাতক তামিম আগেও বিয়ে ছিল। দুই বছর আগে তাদের বিয়ে হয়। তামিমের আগের স্ত্রীর দুটি ছেলে আছে। রাশিদার ঘরে তার ১০ মাস বয়সী তানিম নামে এক ছেলে আছে। অপরদিকে রাশিদা তার স্বামীর প্রথম স্ত্রীর কারণে আগৈলঝাড়া উপজেলা সদরের ১নম্বর ব্রিজ সংলগ্ন এলকায় একমাত্র সন্তানকে নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন।
ঘটনার দিন বুধবার (১৯ জানুয়ারি) নিহত রাশিদাকে নিয়ে গোপালগঞ্জের একটি হোটেলে অবস্থান করে স্বামী তামিম। রাত ৮টার পরে সেখান থেকে বের হয়ে অপর লোকজনের সহায়তায় রাশিদাকে হত্যা করে। পরবর্তীতে গভীর রাতে একটি মাহেন্দ্র ভাড়া করে আগৈলঝাড়ার বাইপাস মহাসড়কের পাশে একটি ঘেরের পাড়ে রাশিদার মরদেহ ও শিশু সন্তানকে জীবিত ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।
হত্যার আলামত উদ্ধার ও অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে বলেও জানান ওসি মো. গোলাম ছরোয়ার।
এদিকে নিহত রাশিদার ভাই আলামিন শাহ বাদী হয়ে তামিম শেখসহ আরও অজ্ঞাতনামা ২-৩ জনকে আসামি করে আগৈলঝাড়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
প্রকাশকঃ ডাক্তার জি.কে চক্রবর্তী।
সম্পাদকঃ কাজী মফিজুল ইসলাম।
প্রধান সম্পাদকঃ নুসরাত রসিদ।
নির্বাহী সম্পাদকঃ জাকিরুল মোমিন।
মোবাইলঃ 01711225620
মেইলঃ protidin.barisal@gmail.com
ঠিকানাঃ প্যারারা রোড, বরিশাল ৮২০০।
Design and developed by Engieer BD Network