প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বিএম কলেজছাত্রীকে রাস্তায় ফেলে মারধর

প্রকাশিত: ৭:৫৮ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৪, ২০২২

প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বিএম কলেজছাত্রীকে রাস্তায় ফেলে মারধর

প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সরকারি ব্রজমোহন কলেজের এক ছাত্রীকে মারধর করেছে সৈয়দ হাতেম আলী কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের ছাত্র নুজাইম শাওন নামের ছাত্রলীগের এক কর্মী। এ ঘটনার বিচার চাইতে গেলে ওই ছাত্রীকে বিএম কলেজে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না বলে হুমকি দেওয়া হয়েছে।
মারধরের শিকার ওই ছাত্রী সোমবার (২৪ জানুয়ারি) বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় এবং কলেজ প্রশাসনকে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিমুল করিম।
তিনি জানান, ছাত্রীকে মারধরের ঘটনায় দুজনের নামে থানায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনা তদন্তে ইতোমধ্যে পুলিশ কাজ শুরু করেছে। হামলাকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে বলে জানান ওসি।
সরকারি ব্রজমোহন কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া বলেন, কিছুক্ষণ আগে ওই ছাত্রী লিখিত অভিযোগ দিয়ে গেছে। আমরা অধ্যাপক আক্তারুজ্জামানকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। প্রতিবেদন পেলেই হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অধ্যক্ষ আরও বলেন, সরকারি ব্রজমোহন কলেজের ছাত্রাবাসে এই কলেজের শিক্ষার্থী ছাড়া অন্য কারও থাকার অনুমতি নেই। যদি কেউ থাকে, তা অবৈধভাবে ছিল। যারা তাদের রেখেছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মারধরের শিকার ছাত্রী জানিয়েছেন, সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের ছাত্র নুজাইম শাওন বিভিন্ন সময়ে তাকে উত্ত্যক্ত করতেন। ঠিক এক বছর আগে তাকে প্রেমের প্রস্তাব দেন। ছাত্রী প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। এতে ওই ছাত্রীর পরিচিতজনের কাছে একাধিকবার হুমকি দিয়েছেন শাওন।
তিনি আরও জানান, সর্বশেষ রোববার (২৩ জানুয়ারি) বিকেলে সরকারি ব্রজমোহন কলেজের সোনালী ব্যাংক শাখার বিপরীতে জনতা লাইব্রেরির সামনে মূল সড়কের মধ্যে আটকে মারধর করেন। মারধরে হাতের মোবাইল পড়ে গিয়ে ভেঙে যায়। এ ঘটনা কাউকে জানালে নুজাইম শাওনের সহযোগী বিএম কলেজের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র সাগর ওই ছাত্রীকে কলেজে ঢুকতে দেবেন না বলে হুমকি দেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত নুজাইম শাওনকে পাওয়া যায়নি, তাই তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে অপর অভিযুক্ত সাগর বলেন, সরকারি ব্রজমোহন কলেজের ফ্লাইট সার্জেন্ট ফজলুল হক হলে আমার কক্ষে থাকে নুজাইম শাওন। শাওন মূলত ছাত্রলীগ নেতা রইজ আহম্মেদ মান্নার অনুসারী। তিনিই শাওনকে এখানে থাকতে দিয়েছেন। ওই ছাত্রীর সঙ্গে দীর্ঘদিন প্রেমের সর্ম্পক ছিল শাওনের।
সাগর আরও বলেন, সম্প্রতি শাওন অন্য আরেক ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ায়। তবে রোববার তার সাবেক প্রেমিকাকে একা পেয়ে রাস্তায় আটকে মারধর করতে থাকে। আমি কাছে ছিলাম বলে দ্রুত সেখানে গিয়ে দুজনকে দুদিকে পাঠিয়ে দিই। এখন শুনছি আমাকেও অভিযুক্ত করে থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, নুজাইম শাওন সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজের ছাত্র হলেও ছাত্রলীগ নেতা পরিচয় দিয়ে সরকারি ব্রজমোহন কলেজের ছাত্রাবাসে অবৈধভাবে দীর্ঘদিন ধরে থাকতেন। তার বিরুদ্ধে এর আগেও ছাত্র মারধর, ছাত্রীদের উত্ত্যক্তের অভিযোগ রয়েছে। ঢাকা পোস্ট

সংবাদটি শেয়ার করুন