গভীর রাতে ববির আবাসিক হলে দুই ছাত্রলীগ কর্মীকে নির্যাতনের অভিযোগ

প্রকাশিত: ৮:৪০ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২, ২০২৩

গভীর রাতে ববির আবাসিক হলে দুই ছাত্রলীগ কর্মীকে নির্যাতনের অভিযোগ

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শের-ই বাংলা হলে গভীর রাতে দুই ছাত্রলীগ কর্মীর ওপর দু’দফা নির্যাতন চালানোর অভিযোগ উঠেছে একই সংগঠনের প্রতিপক্ষের সদস্যদের বিরুদ্ধে। গতকাল শনিবার দিবাগত রাতে প্রথমে হলের একটি কক্ষে এবং পরে মাঠে নিয়ে তাদের নির্যাতন করা হয় বলে ওই দুই ছাত্রলীগ কর্মী অভিযোগ করেছেন।

নির্যাতনের শিকার দুই শিক্ষার্থী হলেন মার্কেটিং বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের রাজু মোল্লা ও উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের একই সেশনের মো. সিফাত হাসান। তারা বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতা আলীম সালেহীর সমর্থক হিসেবে পরিচিত। খবর পেয়ে হল প্রভোস্ট রাত ২টায় ওই দুই শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের আরেকটি পক্ষের নেতৃত্ব দেওয়া তাহমিদ জামান নাভিদের নেতৃত্বে তাদের ওপর নির্যাতন চালানো হয় বলে অভিযোগ করেছেন রাজু মোল্লা ও সিফাত হাসান। তবে অভিযুক্তরা এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাদের দাবি, কক্ষে ধারালো অস্ত্র পাওয়া যাওয়ায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের মারধর করেছে।
ববি’র শের-ই বাংলা হলের প্রভোস্ট সহযোগী অধ্যাপক আবু জাফর মিয়া আজ রোববার দুপুরে বলেন, শনিবার গভীর রাতে খবর পেয়ে রাজু মোল্লা ও সিফাত হাসানকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছি। দুই পক্ষই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে রাজু মোল্লা ও সিফাত হাসানের ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

নির্যাতনের শিকার রাজু মোল্লার অভিযোগ, গতকাল শনিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে তিনি শের-ই বাংলা হলের ২০০৭ নম্বর কক্ষে রোববারের সেমিস্টার পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে পড়াশোনা করছিলেন। এ সময় তাহমিদ জামান নাভিদের তিন অনুসারী তাকে কথা বলার জন্য কক্ষের বাইরে ডেকে নেয়। পরে তারা তাকে জোর করে পাশের ২০০৬ নম্বর কক্ষে নিয়ে যায়। ওই কক্ষে (২০০৬) গিয়ে দেখেন সেখানে সিফাত হাসানও রয়েছে। এরপর তাহমিদ জামান নাভিদ ও তার অনুসারীরা রাজু মোল্লার কক্ষে কিছু ধারালো অস্ত্র রাখার প্রস্তাব দেয়। রাজু মোল্লা তাতে রাজি না হওয়ায় তার মোবাইল কেড়ে নিয়ে ক্রিকেট ব্যাট ও জিআই পাইপ দিয়ে পেটাতে শুরু করে। এ সময় সিফাতকেও নাভিদের অনুসারীরা পিটিয়ে জখম করে।
রাজু মোল্লা বলেন, রাত ২টা পর্যন্ত হলের ২০০৬ নম্বর কক্ষে আমাদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়। পরে আমাকে ও সিফাতকে হলের সামনের মাঠে নিয়েও মারধর করা হয়। এক পর্যায়ে আমার মাথায় ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত করা হলে আমার মাথা কেটে যায়। এরপর হল প্রভোস্ট খবর পেয়ে হলের মাঠে আসেন এবং তিনি আমাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ববি’র বাংলা বিভাগের ২০১৮-১৯ বর্ষের শিক্ষার্থী তাহমিদ জামান নাভিদ সমকালকে বলেন, রাজু মোল্লার কক্ষে ধারালো অস্ত্র পাওয়ায় হলের সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাকে মারধর করেছে। রাজু ও সিফাতকে মারধরের ঘটনার সঙ্গে আমি জড়িত নই।
তার বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অভিযোগ তোলা হচ্ছে দাবি করে তিনি বলেন, একটি পক্ষ হলের স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে চাচ্ছে। তারাই আমার বিরুদ্ধে কাল্পনিক অভিযোগ তুলছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. খোরশেদ আলম বলেন, পূর্বে সংগঠিত একটি হামলার ঘটনার জের ধরেই শনিবার রাতের ঘটনা ঘটেছে। বারবার শের-ই বাংলা হলে এমন ঘটনা ঘটায় আমরাও বিব্রত। হলের পরিবেশ শান্ত রাখতে এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হল প্রভোস্টকে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন