কলাপাড়ায় ভিজিএফ চাল বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম

প্রকাশিত: ৬:৩৪ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৭, ২০২৪

কলাপাড়ায় ভিজিএফ চাল বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি, ০৭ সেপ্টেম্বর ।। পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় মৎস্য ভিজিএফ ও ভিজিডির চাল বিতরনে ব্যাপক অনিয়মের
অভিযোগ উঠেছে। তালিকাভূক্ত দরিদ্র কার্ডধারী শত শত মানুষ তার প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। বিতরণস্থল থেকে এ চাল লুটপাট হয়ে যাচ্ছে। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতীর কারণে প্রকৃত শত শত কার্ডধারীর খাদ্য সহায়তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ফলে সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা বেস্টনীর সুফল সাধারণ মানুষের ভাগ্যে জুটছে না। এসব চাল বিতরনে স্বচ্ছতার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত তদারকি কর্মকর্তারা যেন এ চক্রের কাছে আপোস থাকছেন।

গভীর সমুদ্রে মাছ ধরায় ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ের জন্য সরকারের বরাদ্দকৃত শেষ কিস্তির ৩০ কেজি চাল বর্তমানে বিতরণ চলছে। কলাপাড়ায় ১২ ইউনিয়ন ও দুই পৌরসভার কার্ডধারী তালিকাভুক্ত ১৮ হাজার ৩০৫ জেলে পরিবার এই চাল পাওয়ার কথা। ইতিমধ্যে চারটি ইউনিয়নে চাল বিতরন করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে মেম্বারদের মাধ্যমে স্লিপ দেওয়া হয় বিতরনের আগে। প্রথমত শত শত প্রকৃত কার্ডধারী
ব্যক্তি এই স্লিপ পায়নি। তাদেরকে চাল থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। আবার মিঠাগঞ্জের অন্তত অর্ধশত ব্যক্তি স্লিপ নিয়ে পরিষদে গেলেও তাদের স্লিপ রেখে চাল দেওয়া হয়নি। খালি হাতে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এমনকি বহু মানুষের চাল পথে-ঘাটে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। মিঠাগঞ্জের পূর্বমধুখালী, পশ্চিম মধুখালীতেএমন বহু বঞ্চিত মানুষ পাওয়া গেছে। এ দুই গ্রামের বাসীন্দা মহিম তালুকদার, সেলিম তালুকদার, শয়ন হাওলাদার, দুলাল হাওলাদার, হারুন মোল্লা, নসু হাওলাদার জানান, তাদের অধিকাংশের স্লিপ রেখে দেওয়া হয়েছে। আবার কারও চাল পথিমধ্যে নেওয়া হয়েছে। ৩০ আগষ্ট ওই ইউনিয়নের চাল বিতরণ করা হয়েছে। বঞ্চিতদের অভিযোগ তালিকা যাচাই-বাছাই করলেই পাওয়া যাবে কারা চাল পায়নি।

মৎস্য অফিসসূত্রে জানা গেছে, ইতিমধ্যে মিঠাগঞ্জ ছাড়াও টিয়াখালী, চাকামইয়া, লালুয়া ও ধুলাসারে জেলেদের দ্বিতীয় কিস্তির চাল বিতরণ সম্পন্ন হয়েছে। সব ক’টিতে কমবেশি অভিযোগ রয়েছে। তবে মিঠাগঞ্জে এন্তার অভিযোগ উঠেছে। টিয়াখালী ইউনিয়নে মঙ্গলবার দুপুরে সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার লিজা বেগম পরিষদের গোডাউন থেকে ২২ বস্তা ভিজিএফএর চাল জোর করে নিয়ে গেছে। এ ঘটনার বিচার চেয়ে বুধবার কলাপাড়া পৌরশহরের বাসস্ট্যান্ডে শতাধিক মানুষ মানববন্ধন করেন। ভূক্তভোগী মানুষের পক্ষে ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ এই মানববন্ধন করে। তারা
গরিবের চাল লুটপাট বন্ধের দাবি জানান। পাশাপাশি এ চক্রের জড়িত হোতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনার দাবি করেন।

মিঠাগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেজবাহ উদ্দিন খান দুলাল জানান, তালিকাধারী সবাইকে যথাযথভাবে চাল দেওয়া হয়েছে। তবে চাল বাড়িতে নেওয়ার সময় একটি দলের সন্ত্রাসীরা কিছু সংখ্যক মানুষের চাল ছিনিয়ে নিয়েছে। আবার অনেকে ফেরতও দিয়েছে। তবে জেলেদের তালিকাটি ত্রটিপুর্ণ যা ত্রুটিমুক্ত করার দাবি সচেতন মানুষের।

টিয়াখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান সুজন মোল্লা জানান, দিনে-দুপুরে পরিষদের গোডাউন থেকে ভিজিডির ২২ বস্তা চাল নেওয়ার ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। কলাপাড়া সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা জানান, বঞ্চিতরা লিখিত
অভিযোগ দিলে বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন