বরিশালে নিখোঁজ পুলিশ কর্মকর্তার দেড় মাসেও সন্ধান মেলেনি

প্রকাশিত: ৬:২৫ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৯, ২০২১

বরিশালে নিখোঁজ পুলিশ কর্মকর্তার দেড় মাসেও সন্ধান মেলেনি

প্রায় দেড় মাস আগে নিখোঁজ পুলিশ উপ-পরির্দশক (এসআই) মো: আনোয়ার হোসেন সন্ধান মেলেনি। তাই স্বামীকে ফিরে পেতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন স্ত্রী। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি নিখোঁজ থাকায় দুই সন্তানের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত স্ত্রী নাজমা সুলতানা। এক দিকে সংসার চালাতে কষ্ট। অন্য দিকে সন্তানদের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধের উপক্রম। কোনো উপায় না পেয়ে সন্তানদের নিয়ে পটুয়াখালীর নিজ বাসায় আশ্রায় নিয়েছেন।
স্বামীকে জীবিত অবস্থায় ফিরে পেতে পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতার আবেদন জানিয়ে পটুয়াখালী প্রেসক্লাবে শনিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করেছেন পুলিশ কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী নাজমা সুলতানা।
তার স্বামী আনোয়ার হোসেন পটুয়াখালীর সবুজবাগ এলাকার বাসিন্দা।
সংবাদ সম্মেলনে নাজমা সুলতানা জানান, বরিশালের কাউনিয়া থানায় উপ-পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায় ওই এলাকায় ভাড়ায় বসবাস করে দুটি সন্তানকে সেখানকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি করে। এর মধ্যে গত বছর ২৭ মে করোনায় আক্রান্ত হন আনোয়ার হোসেন। এরপর তিনি আরো বেশ কিছু জটিলরোগে আক্রান্ত হলে ডাক্তারের পরামর্শে চিকিৎসাধীন ছিলেন। একপর্যায়ে চলতি বছর ১ জানুয়ারি আনোয়ার হোসেনকে বরিশালের কাউনিয়া থানা থেকে রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি থানায় বদলি করেন তৎকালীন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার।
স্ত্রী নাজমা বলেন, পরে ওই বদলির আদেশ বাতিল চেয়ে ম্যাসেঞ্জারে আবেদন করায় পুলিশ কর্মকর্তারা বিষয়টি ভাল ভাবে নেননি। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করলে আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়। পরে আনোয়ার হোসেন রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি থানায় যোগ দেন। কিন্তু তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়ায় আরো অসুস্থ হয়ে পরলে রাঙ্গামাটির পুলিশ সুপার তাকে ১৭ আগস্ট কুমিল্লা জেলায় বদলি করে ছাড়পত্র দেন। সেখান থেকে ২১ আগস্ট আনোয়ার হোসেন তার বরিশালের কাউনিয়া এলাকায় ভাড়া বাসায় এসে স্ত্রী সন্তানদের সাথে সময় কাটান। চার দিন পর ২৬ আগস্ট বিকেল থেকে আনোয়ার নিখোঁজ হন। এ ব্যাপারে ১২ সেপ্টেম্বর নাজমা সুলতানা বরিশালের কোতয়ালি মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়রি (জিডি) করেন।
ডায়রিতে নাজমা উল্লেখ করেন, ২৬ আগস্ট বিকেল ৪টার দিকে তার সন্তানকে কোচিং থেকে নিয়ে বাসায় ফিরে এসে তার স্বামীকে আর দেখতে পাননি নাজমা। পরে বিভিন্ন স্থানে তাদের সকল আত্মীয়ের কাছে খোঁজখবর নিয়েও স্বামীর সন্ধান না পেয়ে সাধারণ ডায়রি করেন স্ত্রী।
নাজমা জানান, তাদের দু’ছেলে সন্তান রয়েছে। বড় ছেলে আয়াতুল্লাহ (১৩) বরিশাল জিলা স্কুলের ১০ম শ্রেণির ছাত্র ও ছোট ছেলে আলী নেওয়াজ (১০) বরিশালের একে সিরাজি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র। বর্তমানে বাবার অনুপস্থিতিতে তাদের শিক্ষাকার্যক্রম বন্ধের উপক্রম।
সংবাদ সম্মেলনে নাজমা আরও বলেন, এক দিকে স্বামী নিখোঁজ, অন্য দিকে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছি। তারপর দুটি ছেলের শিক্ষাকার্যক্রমও বন্ধের পথে। সবমিলিয়ে এখন আমি নিজেও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছি। যে কারণে সন্তানদের নিয়ে আমি বর্তমানে পটুয়াখালীতে আমার শ্বশুরের বাসায় উঠেছি। তিনি তার স্বামীর সন্ধানের জন্য পুলিশের সহযোগিতা কামনা করেন। সংবাদ সম্মেলনে তার স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন