বরিশালে পাইকারি ও খুচরা বাজারে সবজির মূল্যে দ্বিগুণ ফারাক

প্রকাশিত: ৭:১৪ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২১, ২০২৪

বরিশালে পাইকারি ও খুচরা বাজারে সবজির মূল্যে দ্বিগুণ ফারাক

বরিশালে পাইকারি বাজারে যে দামে সবজি বিক্রি হচ্ছে তার দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। এতে বাজার করতে এসে চরম বিপত্তিতে পড়ছেন নিম্ন আয়ের মানুষ।

শনিবার (২০ জানুয়ারি) রাতে বরিশাল নগরীর একমাত্র পাইকারি কাঁচামালের বাজার বহুমুখী সিটি মার্কেট ও নগরীর বেশ কয়টি খুচরা বাজারে গিয়ে দেখা গেছে এমন চিত্র।

পাইকারি ও খুচরা বাজারের মূল্যে দ্বিগুণ পার্থক্যের বিষয়ে জানতে চাইলে নগরীর বাংলাবাজার এলাকার সবজি বিক্রেতা তৌহিদুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, পাইকারি মোকাম থেকে সবজি কেনার পর পরিবহন ব্যয় ও শ্রমিক মজুরি দিয়ে আনতে হয়। তারপর বাজারে সবজি নিয়ে বসলে সেজন্য ভাড়া দিতে হয়। লাইটের জন্য আলাদা টাকা দিতে হয়। অনেক সময় সবজি নষ্ট হয়ে গেলে আমাদের লোকসান গুনতে হয়। তাই খুচরা বাজারের সঙ্গে পাইকারি দরের তুলনা করে লাভ নেই।

বহুমুখী সিটি মার্কেট পাইকারি বাজার ঘুরে দেখা যায়, ফুলকপি ৩৫-৪০ টাকা কেজি, শালগম ২০-২৫ টাকা কেজি, টমেটো ২০-২৫ টাকা কেজি, বেগুন ৫০ টাকা কেজি, বাঁধাকপি ১০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া (দেশি) ২৫-৩০ টাকা, গাজর ২৫ টাকা কেজি, শিম ৩৫-৪০ টাকা কেজি, শসা ১৫-২০ টাকা কেজি, কাঁচামরিচ ৫০-৬০ টাকা কেজি, করোল্লা ৬০ টাকা কেজি, চিচিঙ্গা ২৫-৩০ টাকা কেজি, বরবটি ৫০-৬০ টাকা কেজি, পেঁপে ১৫ টাকা কেজি, লাউ প্রতি পিস ৪০-৬০ টাকা, লেবু প্রতি হালি ১২-১৫ টাকা ও কাঁচকলা ১০-১৫ টাকা হালি বিক্রি হচ্ছে।

একই সবজি খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে প্রায় দ্বিগুণ দামে। এর মধ্যে ফুলকপি ৫০ টাকা কেজি, শালগম ৪০ টাকা কেজি, টমেটো ৪০ টাকা কেজি, বেগুন ৭০ টাকা কেজি, বাঁধাকপি ৩০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া (দেশি) ৪০ টাকা, গাজর ৪০ টাকা কেজি, শিম ৭০ টাকা কেজি, শসা ৪০ টাকা কেজি, কাঁচামরিচ ১২০ টাকা কেজি, করোল্লা ৮০ টাকা কেজি, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা কেজি, বরবটি ৮০ টাকা কেজি, পেঁপে ৪০-৫০ টাকা কেজি, লাউ প্রতি পিস আকার ভেদে ৮০ টাকা পর্যন্ত, লেবু প্রতি হালি ২০ টাকা ও কাঁচকলা ৩০ টাকা করে হালি বিক্রি হচ্ছে।

নগরীর চৌমাথায় বাজার করতে আসা সিরাজ হাওলাদার বলেন, যে হারে সব জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে আমাদের মতো খেটে খাওয়া মানুষের না খেয়ে থাকার অবস্থা হয়েছে। প্রতি সপ্তাহেই নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। কোনো সবজি ৮০ টাকার নিচে নেই।

আরেক ক্রেতা সাহাবুদ্দিন বলেন, কোনো কিছুই আমাদের নাগালের মধ্যে নেই। মাছ-মাংসের যে হারে মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে তা এখন ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। সবজি একটু ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে ছিল তাও এখন দিন দিন নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। এক হাজার টাকা নিয়ে বাজারে গেলে সবকিছু কিনে বাড়ি ফিরতে পারি না।

নগরীর বহুমুখী সিটি মার্কেট পাইকারি বাজারের ব্যবসায়ী মেসার্স দুলাল বাণিজ্যালয়ের প্রোপাইটর আমিন শুভ বলেন, পাইকারি বাজারে গত এক সপ্তাহ ধরেই সব ধরনের সবজি একই দামে বিক্রি হচ্ছে। শুধু দু’একটা সবজির দাম ৫ টাকা থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এছাড়া সব সবজি আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে।

খুচরা বাজারে দ্বিগুণ মূল্যে বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে এ বিক্রেতা বলেন, ব্যবসায়ীরা পাইকারি বাজার থেকে পণ্য কিনে গাড়িভাড়া দিয়ে খুচরা বাজারে বিক্রি করেন। সেক্ষেত্রে কিছুটা লাভ রাখতে পারেন। কিন্তু প্রায় সময় দেখি পাইকারি বাজার থেকে পণ্য কিনে নিয়ে দ্বিগুণ-তিনগুণ দামে বিক্রি করছেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন