বরিশাল সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে ভুয়া বিলে সরকারের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ

প্রকাশিত: ৬:২৬ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৫, ২০২০

বরিশাল সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে ভুয়া বিলে সরকারের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ

বরিশাল সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে নকলনবীশদের নামে ভুয়া বিলের কাগজ তৈরি  করে দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে সরকারের কোটি কোটি টাকা আত্মসাত করছে ।অফিসের কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা। দুর্নীতির অভিযোগ পেয়ে এখনও কোনো পদক্ষেপ নেননি জেলা রেজিস্ট্রার পথিক কুমার সাহা। সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে ভুয়া বিলের দুর্নীতির কারণে বছরে সরকারের  হাজার কোটি টাকার উপরে  আত্মসাত করছে একটি কুচক্রী  মহল। দুর্নীতির বিষয়ে জানতে চাইলে সদর সাব-রেজিস্টার মোঃ ইউছুফ আলী মিয়া নতুন যোগদান করেছেন বলে দায় এড়িয়ে যান।সরকারের টাকা আত্মসাতের মাধ্যমে সাব-রেজিস্ট্রারসহ অনেকে যেমন আঙ্গুল  ফুলে কলাগাছ হয়েছেন তেমনি নকল নবীশরা চাকুরী হারাতে বসেছেন। সরকারের ওই টাকা উদ্ধারে এখনও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি দুদক। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে দুর্নীতিবাজদের বাচাতে তদবিরের প্রক্রিয়া। দফায় দফায় চলছে নকল নবীশদের নিয়ে জেলা রেজিস্ট্রারের গোপন মিটিং। এমনও শোনা যায়, অফিসের দুর্নীতির বিষয়ে বাহিরের লোকে যেনো না জানে, এমনকি সাংবাদিকদের সাথে কেউ কথা না বলে তা নিয়ে সক্রিয় একটি মহল। তবে বরিশাল সদর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের অনিয়মের ব্যাপারে শুরু হয়েছে সাংবাদিকদের অনুসন্ধান। নকল নবীশদের নামে ভুয়া বিলের প্রতিবাদ জানিয়েছেন ভুক্তভোগী নকলনবীশরা। তারা বলেন, আমাদের নামে ভুয়া বিল করে বছরে হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে অফিসের কিছু চিহ্নিত দুর্নীতিবাজরা। তারা বলেন, আমাদের নামে ভুয়া বিল হয় আমরা জানিনা।বরিশাল জেলা নকলনবীশ এসোসিয়েশনের সভাপতি শফিকুল ইসলাম ও সম্পাদক মাহবুব হোসেন বলেন, পেশকার শাহিন ভুয়া বিলের কাগজ তৈরি করে সকল নকলনবীশদের সাইন নেন আর এই কাগজ কম্পোজ করেন নকলনবীশ আসাদ ওরফে সোহেল। পেশকার শাহিন বলেন অফিস তাকে দায়িত্ব দিয়েছে নকলনবীশদের সাইন নিতে। আর এই সুযোগে ভুয়া বিলে সাইন নিয়ে শাহিন ও আসাদ গং রা সরকারের কোটি কোটি টাকা লোপাট করেই চলেছেন। আশ্চর্য হলেও সত্যি  পেশকার শাহিন প্রায় একযুগ যাবৎ নকলনবীশদের বিলে সাইন করানোর দায়িত্ব পালন করে আসছেন।যে সকল নকলনবীশদের নামে ভুয়া বিল করা হয়েছে,মনিকা রানী দাস ৯শত টাকার পরির্বতে ৭ হাজার ৯শত টাকা, জেমি ১৯শত টাকার পরির্বতে ১৯ হাজার, রোকছনা ১২ শত টাকার পরির্বতে ১২ হাজার, রোকেয়া ৬শত টাকার পরির্বতে ১৬ হাজার, লিজা আক্তার মনি মার্চ মাসে অফিস না করেও তার নামে ১২ হাজার, আছিয়া মার্চ মাসে ২৬শত টাকার পরির্বতে ৪ হাজার ৮শত, অনুপস্থিত এমন কিছু নকল নবীশদের বেতন, তাছলিমা আক্তার ২৬৭৬৪ টাকা, রাসেল হাওলাদার ২০২৫৬ টাকা, সালমা খানম ২২৩৪৪ টাকা, লাভলী আক্তার ২৩৭৬৭টাকা, মোঃ গফফারের বেতন আসে ৭১৫২ টাকা।অনিয়মে অভিযুক্ত নকল নবীশ আসাদ হোসেন (সোহেল) পলাতক। তার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। পেশকার শাহিনের বিরুদ্ধে হাজারো অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও তিনি নিয়মিত অফিস করেন। শাহিন বলেন, আমার কোনো বিল কাগজে স্বাক্ষর নেই। কোন প্রকার অভিযোগ মানতে নারাজ পেশকার শাহিন। নকলনবীশ থেকে শুরু করে দলিল লেখক পর্যন্ত শাহিনের অত্যাচারে অতিষ্ঠ। নিজেকে বাচাতে শাহিন নানান কৌশল অবলম্বন করেন। তবে সবাই শাহিনসহ দুর্নীতির সাথে জরিতদের শাস্তি কামনা করেন। সবাই শাহিন আসাদসহ দুর্নীতির সাথে জরিতদের কি বিচার হবে তাহা দেখার অপেক্ষায়।অনিয়মের বিষয়ে জেলা রেজিস্ট্রার পথিক কুমার সাহা বলেন, আমরা দ্রুত তদন্ত কমিটি করে দুর্নীতির সাথে জরিতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরোও বলেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়ার সাথে সাথে তাদের বিরুদ্ধে কঠর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ