চর বিজয়ে জেলেদের পাতা ঘন ফাঁসের জালে মারা পড়ছে ছোট ছোট মাছ

প্রকাশিত: ৬:১৮ অপরাহ্ণ, মার্চ ২, ২০২২

চর বিজয়ে জেলেদের পাতা ঘন ফাঁসের জালে মারা পড়ছে ছোট ছোট মাছ

কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি,০২ মার্চ।। কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোসাগরের বুক চিরে জেগে ওঠা চর বিজয়ে ঘন ফাঁসের জাল দিয়ে ফাঁদ পেতে ছোট ছোট মাছ শিকার করছে জেলেরা। পুরো চরজুড়ে এসব জাল পেতে রাখা হয়েছে। এতে ইলিশের পোনা, পোয়া, টেংরা, গুলিশাসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনা আটকা পরে মারা পড়ছে। এমন দৃশ্য দেখে পর্যটকরা হতবাক। এর ফলে অচিরেই সমুদ্রের মাছের ভান্ডার শূন্য হয়ে পড়বে এমনটাই জানিয়েছেন চর বিজয় থেকে ফিরে আসা পর্যটকরা।
স্থানীয় ও পর্যটকদের সূত্রে জানা গেছে, মৎস্য আইনে মাছের পোনা সংরক্ষণে সোয়া চার ইঞ্চির কম ফাঁস জাল ব্যবহার করা দন্ডনীয় অপরাধ। অথচ এক শ্রেনীর জেলেরা ঘন ফাঁসের জাল ব্যবহার করে প্রতিনিয়ত ইলিশসহ বিভিন্ন মাছের পোনা এমনভাবে হত্যা করছে। তবে প্রতিদিন কি পরিমাণ পোনা মাছ নিধন হচ্ছে, তা চোখে না দেখলে কল্পনা করাও কঠিন। তবে মৎস্য বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, অবাধে মাছের পোনা নিধনযজ্ঞ বন্ধ না হলে অনেক প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হয়ে যাবে।
চর বিজয় থেকে ফিরে আসা পর্যটক মেহেদী হাসান বলেন, চরের বিভিন্ন স্থানে বাঁশের খুঁটি গেড়ে ভাসা ও বেড় জাল পেতে রাখা হয়েছে। অবৈধ এ জাল দিয়ে মাছ শিকার করছেন জেলেরা। অপর এক পর্যটক মনির বলেল, ওইসব জালে ধরা পড়ে সমুদ্রীক অসংখ্য বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনা। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন তারা।
ট্যুরিষ্ট বোট মালিক সমতির সভপাতি মো.জনি অলমগীর বলেন, কুয়াকাটা থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার বঙ্গোপসাগরের অভ্যন্তরে জেগে ওঠা এক নতুন চর ‘চর বিজয়’। সেখানে বর্ষা মৌসুমে পানিতে ডুবে থাকলেও শীত মৌসুমে বিশাল অকৃতি নিয়ে জেগে ওঠে এ চরটি। সারা বছর এর আশপাশে থাকে জেলেদের উপস্থিতি। এছাড়া অস্থায়ী বাসস্থান তৈরি করে মাছ শিকার ও শুঁটকি তৈরি করেন ওইসব জেলেরা।
ইউএসএইড,ইকোফিস-২ওয়ার্ল্ডফিস বাংলাদেশ’র সহযোগী গবেষক সাগরিকা স্মৃতি বলেন, শীত মৌসুমে অধিকাংশ মাছ চর বিজয়ের কোল ঘেষে ডিম ছাড়তে আসে। এর মধ্যে শতকরা ৮০ ভাগই ইলিশ। বাকি ২০ ভাগের মধ্যে রয়েছে তাইড়া, পোয়া, ফাইসা, বাটা, তুলারডাটিসহ আরো অনেক প্রজাতির মাছের পোনা। ইতোমধ্যে সেখান থেকে মাছের নমুনা আনা হয়েছে। তবে চর বিজয় মৎস্য প্রজনন এলাকা হিসেবে ঘোষনার দাবী জানিয়েছেন এই গবেষক।
কুয়াকাটা নৌ-পুলিশ ফাড়ি ইনচার্জ আখতার মোর্শেদ বলেন, ইতোমধ্যে সাগর ও নদীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু জাল জব্দ করে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। তবে তাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অপু সহা বলেন, অবৈধ জাল পাতা বন্ধে মৎস্য বিভাগ নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছে

সংবাদটি শেয়ার করুন