ঢাকা ১০ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৭শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১১ই শাবান, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৫:৫৫ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৯, ২০২০
বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার পশ্চিম বাগধা রেড ক্রিসেন্ট মাতৃ সদন ক্লিনিকে আয়াদের কারণে গর্ভাবস্থায় মা ও সন্তানের মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনার পর ক্লিনিক সিলগালা করে অভিযুক্ত দুই আয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।
সোমবার দুপুরে হাসপাতাল থেকে প্রসূতির মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নিহত সীমা বেগম (৩৫) উপজেলার দক্ষিণ চাঁদত্রিশিরা গ্রামের দরিদ্র ভ্যানচালক মন্টু বাহাদুরের স্ত্রী। চতুর্থ সন্তানের প্রসব বেদনা শুরু হলে সোমবার সকাল ৭টার দিকে তাকে রেড ক্রিসেন্ট মাতৃ সদন ক্লিনিকে নেয়ার পর গর্ভের সন্তানসহ মারা যান সীমা। সীমা বেগমের পূর্বে দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।
আগৈলঝাড়া থানার ওসি গোলাম ছরোয়ার জানান, সরকারি অনুমোদন বিহীন ওই ক্লিনিকে কোনো রেজিস্টার চিকিৎসক না থাকার পরও সেখানে কর্মরত আয়া রাশিদা বেগম ও মায়া বেগম সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সীমা বেগমের ডেলিভারি করাতে গিয়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে গর্ভের সন্তানসহ সীমার মৃত্যু হয়। বিষয়টি সীমার স্বজনদের কাছে গোপন রেখে সীমাকে অন্যত্র নিয়ে ডেলিভারি করার কথা বলে ওই আয়ারা দ্রুত সটকে পরেন।
ওসি আরো জানান, সীমার স্বামী ক্লিনিকের আয়াদের কথানুযায়ী দ্রুত সীমাকে পয়সারহাট আদর্শ জেনারেল হাসপাতালে নিলে সেখানের চিকিৎসকেরা সীমাকে দ্রুত উপজেলা হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেন। সীমার অসহায় স্বামী তাকে নিয়ে উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মামুন মোল্লা প্রসূতি সীমাকে মৃত ঘোষণা করেন।
খবর পেয়ে গৌরনদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুর রব হাওলাদার হাসপাতালে ছুটে যান। সেখানে গিয়ে ময়নাতদন্তের জন্য সীমার মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যান। এরপর অতিরিক্ত পুলিশ ওই ক্লিনিকে পরিদর্শনে গিয়ে সেখানের অভিযুক্ত দুই আয়া রাশিদা বেগম ও মায়া বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় নিয়ে আসেন। এ ঘটনায় নিহত গৃহবধূর স্বামী মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
আগৈলঝাড়া হাসপাতালের চিকিৎসক মামুন মোল্লা জানান, তার কাছে আসার পরে সীমার কোনো পালস পাননি। তাই তাকে কোনো চিকিৎসা প্রদান করা সম্ভব হয়নি। প্রসবজনিত কারণে সীমার মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানিয়ে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে বলেও জানান এ চিকিৎসক।
উপজেলা হাসপাতাল প্রধান ডা. বখতিয়ার আল মামুন জানান, উপজেলায় যতগুলো বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক রয়েছে তার তালিকায় ‘রেড ক্রিসেন্ট মাতৃ সদন’ ক্লিনিকের নাম নেই। সরকারি অনুমোদন ছাড়া কিভাবে তারা রোগী ভর্তি ও চিকিৎসা প্রদান করেন তা নিয়েও বিস্ময় প্রকাশ করেন। ওই ক্লিনিকের কাগজপত্রসহ যাবতীয় কার্যক্রম পরিদর্শনের জন্য পুলিশসহ স্যানিটারি ইন্সপেক্টর সুকলাল সিকদারকে পাঠানো হয়েছে। কথিত ক্লিনিকটি সিলগালা করে দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
উপজেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর সুকলাল সিকদার জানান, ক্লিনিক পরিচালনার জন্য কোনো কাগজপত্র বা কোনো লোকজন পাওয়া যায়নি। দুই জন আয়াকে পাওয়া গেছে, তাদের পুলিশ হেফাজতে নিয়েছে। ক্লিনিকটি সিলগালা করে দেয়া হয়েছে।
প্রকাশকঃ ডাক্তার জি.কে চক্রবর্তী।
সম্পাদকঃ কাজী মফিজুল ইসলাম।
প্রধান সম্পাদকঃ নুসরাত রসিদ।
নির্বাহী সম্পাদকঃ জাকিরুল মোমিন।
মোবাইলঃ 01711225620
মেইলঃ protidin.barisal@gmail.com
ঠিকানাঃ প্যারারা রোড, বরিশাল ৮২০০।
Design and developed by Engieer BD Network