বরিশাল সদর গার্লস স্কুলের শতবর্ষ উদ্যাপনে এমপি সুলতানা নাদিরাকে আহ্বায়ক করে নতুন কমিটি ঘোষণা

প্রকাশিত: ৭:৫৩ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৮, ২০২৪

বরিশাল সদর গার্লস স্কুলের শতবর্ষ উদ্যাপনে এমপি সুলতানা নাদিরাকে আহ্বায়ক করে নতুন কমিটি ঘোষণা

বরিশাল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শতবর্ষ উদ্যাপনের লক্ষ্যে অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন পুনর্গঠন করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের ঐক্যমতের ভিত্তিতে পূর্বের কমিটি ভেঙে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। নবগঠিত কমিটিতে বরগুনা-২ আসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য ও সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রী (১৯৬৯ ব্যাচ) সুলতানা নাদিরা জলিকে আহ্বায়ক এবং সদস্য সচিব করা হয়েছে বেগম তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মহিলা কলেজের সহকারী অধ্যাপক ও সদর গার্লস স্কুলের সাবেক ছাত্রী (১৯৮৩ ব্যাচ) শানজিদা শাহনেওয়াজ লিজাকে। এছাড়া সদ্য সাবেক কমিটি আহ্বায়ক অধ্যাপক শাহ্ সাজেদাকে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়েছে।

শতবর্ষ উদ্যাপনে দুইদিন ব্যাপি অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বের ২২ সদস্য বিশিষ্ট মূল কমিটি ছাড়াও সাবেক ও বর্তমান ১১৭ জন শিক্ষার্থীর সমন্বয়ে আরো ১৫টি উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাছাড়া দ্বিতীয় পর্বের জন্য গঠন করা হয়েছে ২১ সদস্য বিশিষ্ট ওয়ার্কিং কমিটি। শতবর্ষ উদ্যাপনের জন্য চলতি বছরের আগামী ২১ ও ২২ ডিসেম্বর সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা করা হয়। এজন্য আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত রেজিস্ট্রেশনের সময় বেধে দেওয়া হয়েছে।

গতকাল রোববার নগরীর বগুড়া রোড এলাকার একটি বাড়িতে পূর্বের কমিটির নেতৃবৃন্দ এবং স্কুলের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে সাধারণ সভা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান, অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক ও সংসদ সদস্য সুলতানা নাদিরা জলি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘গত কয়েকমাস যাবত আমরা স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা লক্ষ্য করছি যে, বরিশাল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শতবর্ষ বাস্তবায়ন কার্যক্রমে গুটিকয়েক প্রাক্তন শিক্ষার্থী কর্তৃক গঠনকৃত কমিটির নানারকম অসঙ্গতি। যা অনুষ্ঠানটি সুন্দর, সুচারু ও সুশৃঙ্খলভাবে অনুষ্ঠিত হওয়ার অন্তরায়।

এর প্রেক্ষিতে আমরা বিভিন্ন সময় বর্তমান কমিটির আহ্বায়ক শাহ্ সাজেদার সাথে যোগাযোগ করে একটি সাধারণ সভা করার অনুরোধ করে আসছি। তিনি অন্ততপক্ষে চারবার সভা করার অঙ্গীকার করেছেন। সর্বশেষ তিনি গত ৪ জানুয়ারি সভা করবেন বলে বরিশাল সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জেবুন্নেছা আফরোজকে প্রতিশ্রুতি দেন।

এর ধারাবাহিকতায় নির্ধারিত দিন এবং সময়ে সাবেক কমিটির সদস্যরা সভাস্থলে উপস্থিত হলেও আসেননি আহ্বায়ক শাহ্ সাজেদা। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে তাঁর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থী তাঁর বাসায় ছুটে যান। এসময় তিনি পরবর্তীতে সভা করার বিষয়ে অঙ্গীকার করেন।

লিখিত বক্তব্যে দাবি করা হয়েছে, ‘সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষন করে আমাদের মনে হচ্ছে তিনি বিষয়টিকে নেহায়েত গুরুত্বহীন মনে করছেন ও সময় ক্ষেপন করছেন। অবশেষে ২০ জানুয়ারি আহ্বায়ক শাহ্ সাজেদা এবং তার কমিটির সকলকে সাধারণ সভায় অংশগ্রহণের জন্য চিঠি প্রদান করা হয়। এতে তিনি সম্মতি প্রকাশ করে কোন প্রকার রেজুলেশন ছাড়াই সভার আহ্বান জানান।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সভায় এজেন্ডা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বেই কেউ কেউ মতামতের ভিন্নতা প্রকাশ করেন এবং দফায় দফায় তুমুল বাকবিতন্ডায় জড়ান। একপর্যায় সভা মুলতবি ঘোষণা করেন সভার সভাপতি শাহ্ সাজেদা এবং কোন প্রকার সিদ্ধান্ত ছাড়াই ২২ জানুয়ারি পরবর্তী সভা করার প্রতিশ্রুতি দেন।

এর কিছু সময় পরেই ২১ জানুয়ারি কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক জান্নাতুন নেছা নয়ন তার বাসায় আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবকে সমঝোতার জন্য আহ্বান জানান। কিন্তু সেখানেও যাননি আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব। এসব কারণে শতবর্ষ উদ্যাপন অনুষ্ঠানটি সুন্দর ও উপভোগ্য করে পরিচালিত করার অসম্ভব বলে সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা মনে করেন।

সংবাদ সম্মেলনে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, ‘আজ অবধি কোন একটি কার্যক্রম নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে পরিচালনা করতে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছেন সাবেক কমিটি। শুধুমাত্র রেজিস্ট্রেশন কমিটি অনুষ্ঠানের কাজ শ্রুটিপূর্ণরূপে শুরু করেছেন। যা নিয়ে কমিটির অন্য সদস্যরা অনেকেই সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছেন। এছাড়াও সাবেক কমিটির বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরা হয় সংবাদ সম্মেলনে।

পরে ঐতিহ্যবাহী বরিশাল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূতি উদ্যাপনের জন্য সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা করেন নবগঠিত কমিটির নেতৃবৃন্দ।

সংবাদটি শেয়ার করুন